ঢাকা: শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকারকে স্থায়ী বরখাস্ত না করায় বিক্ষোভ শুরু করেছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রীরা।
আজিমপুর শাখায় গণিতের এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগ তুলে বরখাস্ত চেয়েছেন তারা।
রোববার(২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার শিক্ষার্থীরা সকাল সোয়া ১১টা থেকে কলেজ ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।
বর্তমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
এসময় ‘বাবার মুখোশে পিশাচ, নিপাত যাক’ ‘যৌন নিপীড়নকারী শিক্ষকের বহিষ্কার চাই’ স্লোগানে প্রধান ফটক আটকে রেখে বিক্ষোভ চলমান রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
দশম শ্রেণির ছাত্রী তাসমিয়া বলেন, বিদ্যালয়ে আসার মানে কী! যদি শিক্ষাগ্রহণের বদলে নিপীড়নের শিকার হতে হয়, এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
সাবেক শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের সংগঠক নিশাত বলেন, কোচিং শেষে দু-একজনকে আটকে রেখে উনি নিপীড়ন করতেন। গার্লস হওয়া স্বত্বেও এ শিক্ষকের কাছে ভিক্টিমরা অহরহ নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। আমাদেরও সিনিয়ররা যারা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে গেছেন তারাও বলছেন, ১০- ১১ বছর ধরে কেউ কখনও মুখো খোলেনি যারা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।
শাহনাজ নামে এক অভিভাবক বাংলানিউজকে বলেন, মুরাদ হোসেনকে বরখাস্ত না করে কেন মেইন শিফটে দেওয়া হয়েছে। আমাদের বাচ্চারা এমন শিক্ষকের কাছে নিরাপদ নয়। তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।
রতন আহমেদ নামে আরেক অভিভাবক বলেন, এই শিক্ষককে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে তাকে স্পটে এনে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
সামিহা নামের এক সাবেক শিক্ষার্থী আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে বলেন, আমাদের দাবি, মুরাদ হোসেনকে সম্পূর্ণভাবে বরখাস্ত করা। অথচ তাকে প্রধান শাখায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। যেন এই শিক্ষক কোনোভাবেই ক্যাম্পাসে ফেরত আসতে না পারে। তার শাস্তি চাওয়ায় অনেককে হুমকি, ধামকি দেওয়া হয়েছে।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দিবা শাখার প্রধান শাবনাজ সোনিয়া কামাল বলেন, প্রতিষ্ঠানের ওপরে আস্থা রাখো মেয়েরা। তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে, আমরা ব্যবস্থা নেব।
প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ভিকারুননিসা স্কুলের আজিমপুর শাখার প্রধান সাবনাজ সোনিয়া কামালের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন কয়েকজন অভিভাবক। সেখানে তারা তাদের সন্তানদের মুরাদ হোসেন যৌন হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ করেন। পরে সেই অভিযোগপত্র ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের কাছে পাঠানো হয়।
পরদিন (৮ ফেব্রুয়ারি) অধ্যক্ষ তিন সদস্যের প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির আহ্বায়ক আইসিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মমতাজ বেগম। সদস্য পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ফারহানা খানম ও ইংরেজি প্রভাতি শাখার শাখাপ্রধান শামসুন আরা সুলতানা।
এরপর মুরাদ হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি যৌন নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাকে আজিমপুর শাখা থেকে সরিয়ে অধ্যক্ষ কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪
এনবি/এসএএইচ