ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি): জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকাকে আত্মহত্যায় বাধ্য করার অভিযোগে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে একাধিক ছাত্র সংগঠন।
শনিবার (১৬ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করে ছাত্র ফেডারেশন।
এর আগে একই দাবিতে দুপুর ১২টায় মানববন্ধন করে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি।
ছাত্র ফেডারেশনের মানববন্ধনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান নিশাদ বলেন, ফাইরুজের হত্যার মধ্য দিয়ে আমরা দেখি, কীভাবে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে। তার মৃত্যুর পর ভিক্টিম ব্লেমিং খেলা শুরু হয়েছে। কি এক ভয়ের সংস্কৃতির মধ্যে আমরা বাস করছি! বর্তমানে তারা এমন ক্ষমতায় আসীন হয়েছেন, যার কোনো জবাবদিহিতা নেই। ফলে সহকারী প্রক্টরের সহযোগিতা নিয়ে একজন নারীর ওপর দীর্ঘ সময় নিপীড়ন চালানো হয়।
ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটি সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টররা নিজেদের জমিদার মনে করেন। ঢাবিতে কয়েকদিন আগেও যৌন নিপীড়নের ঘটনা হলো। ঢাবির একদল শিক্ষার্থী রমজানের প্রোগ্রাম করার সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে হামলা করা হলো। প্রশাসন এসবের বিচার না করে বরং সমর্থন করল। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দিতে ভয় পায়। কারণ, সামগ্রিকভাবে একটি ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মানুষ জেগে উঠলে তখন লোক দেখানো দুয়েকটি বিচার হয়।
কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক ফারহানা মানিক মুনার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির কার্যকরী সদস্য জিন্নাত আরা, ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক, সংগঠক সীমা আক্তার, ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক নুসরাত হক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাম্য সরকার।
গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফাইরুজ একজন দীপ্ত প্রতিবাদী ছিলেন। তাকে ‘টেকনিক্যালি মার্ডার’ করা হয়েছে বলেও দাবি করেন বক্তারা।
ছাত্রশক্তির যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল হায়দার মাসুদ বলেন, প্রক্টররা যেখানে রক্ষক হওয়ার কথা ছিল, তারাই ভক্ষকে পরিণত হয়েছেন। বিচার দাবি নিয়ে গেলে তারা ভুক্তভোগীকেই দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
সংগঠনের আহ্বায়ক সদস্য ফারজানা আফিফা অদিতি বলেন, বাংলাদেশে নারীদের এত ক্ষমতায়নের পরও নারী নির্যাতন কমেনি। যারা হত্যার সাথে জড়িত তাদের দ্রুত বিচার দাবি করছি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর আগে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে মৃত্যুর জন্য দায়ী করেন অবন্তিকা। এ ঘটনায় জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে সাময়িক অব্যাহতি ও শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২৪
এমজে