জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি): আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আ. স. ম. ফিরোজ-উল-হাসানকে। সোমবার (১৮ মার্চ) তিনি পদত্যাগ করেন।
জানা গেছে, জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মো. নুরুল আলমের নির্দেশে তিনি পদত্যাগ করেছেন। নতুন করে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান ও উপাত্ত বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং শহীদ তাজউদ্দীন হলের প্রভোস্ট আলমগীর কবিরকে ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. আবু হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে, সোমবার বিকেল থেকে নতুন প্রক্টরকে তার দায়িত্বভার গ্রহণ করার বিষয়ে অফিস আদেশ জারি করেছে রেজিস্ট্রার কার্যালয়। এর আগে দুপুরে নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে জরুরি সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে বক্তব্য দেন উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মো. নুরুল আলম।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সিন্ডিকেটের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রক্টরের পদে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেন তিনি। বিকেলে রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে এক অফিস আদেশের মাধ্যমে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে গড়ে ওঠে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’। সেখান থেকে দায়িত্ব অবহেলার দায়ে প্রক্টর ও প্রভোস্টের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে প্রায় সোয়া এক মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন পরিচালিত হয়। গত ১০ মার্চ অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেন তারা। গত বুধবার (১৩ মার্চ) অবরোধের তৃতীয় দিন উপাচার্যের আশ্বাসে অবরোধ স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।
এদিন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলাপও করেন উপাচার্য। এ সময় আন্দোলনকারীদের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান ও প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাব্বির আলম স্বেচ্ছায় ১৭ মার্চের মধ্যে পদত্যাগ করবেন। যদি পদত্যাগ না করেন তাহলে ১৮ মার্চের মধ্যে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।
প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান ২০০৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সময়কালে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সহকারী প্রক্টর ও ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরের দায়িত্ব পান তিনি। এরপর ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর স্থায়ী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠিত নানা ইস্যুতে অভিযুক্ত হন আ স ম ফিরোজ উল হাসান।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ধামাচাপা দেওয়া, দোষীদের বাঁচাতে লেজুড়বৃত্তি, নিয়োগ বাণিজ্য, মাদক সিন্ডিকেটে সহায়তা, ছাত্র-শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বে অবহেলা, ধর্ষকদের পালাতে সহযোগিতা করা, মেয়াদ উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করার বিষয়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন না করাসহ নানা অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৪
এমজে