সিলেট: মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় সিলেট বোর্ডে পাসের হার কমেছে। তবে জিপিএ-৫ বেড়েছে।
এবার সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ৪৭১ জন। গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার কমেছে ২ দশমিক ৭১ শতাংশ। গতবছর পাসের হার ছিল ৭৬ দশমিক ০৬ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫ হাজার ৪৫২ জন। এর আগের বছর ২০২২ সালে পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৮২ শতাংশ।
রোববার (১২ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিলেট শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ চন্দ্র পাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ৪৭১ জন। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫ হাজার ৪৫২ জন। সে হিসেবে এবার জিপিএ-৫ বেড়েছে মাত্র ১৯টি। এ বছর বিজ্ঞানে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ১৩৫ জন। এরমধ্যে ছাত্র ২ হাজার ৫২৮ জন এবং ছাত্রী ২ হাজার ৬০৬ জন। মানবিকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৪৪ জন। এ মধ্যে ছাত্র ৫৪ ও ছাত্রী ১৯০ জন। ব্যবসা শিক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৩ জন। এর মধ্যে ৩৪ জন ছাত্র ও ৫৯ ছাত্রী রয়েছে।
এসএসসিতে এ বছর এক লাখ ৯ হাজার ৫৮০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অংশগ্রহণ করে এক লাখ ৯৭৩ জন। এদের মধ্যে কৃতকার্য হয় ৮০ হাজার ৬ জন।
বিজ্ঞান বিভাগে ২৪ হাজার ২২৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৪ হাজার ১৫৩ জন অংশ নিয়ে পাস করেছে ২১ হাজার ২৮৯ জন। এর মধ্যে ১০ হাজার ৫১০ জন ছাত্রের মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১০ হাজার ৪৭৯ জন। এর মধ্যে পাস করে ৯ হাজার ৫৬৬ জন। আর ১৩ হাজার ৭১৬ জন ছাত্রীর মধ্যে পরীক্ষায় ১৩ হাজার ৬৭৪ জন অংশ নিয়ে পাস করেছেন ১১ হাজার ৭২৩ জন। বিজ্ঞান বিভাগে মোট পাসের হার ৮৮ দশমিক ১৪ শতাংশ। আর মানবিকে পাসের হার ৬৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। সিলেট বোর্ডের অধীন ৭৭ হাজার ৯৫৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭৭ হাজার ৫৪৭ জন অংশ নিয়ে পাস করে ৫৩ হাজার ১১৬ জন। এদের মধ্যে ছাত্র ৩০ হাজার ৮৭২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩০ হাজার ৭৩৪ জন অংশ নিয়ে পাস করে ২০ হাজার ৯৭৯ জন। আর ছাত্রী ৪৭ হাজার ৮২ জন পরীক্ষার্থী থাকলেও অংশ নিয়েছে ৪৬ হাজার ৮১৩ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৩২ হাজার ১৩৭ জন।
ব্যবসা শিক্ষায় বোর্ডে মোট ৭ হাজার ৪০০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭ হাজার ৩৭৩ জন অংশ নিয়ে পাস করেছে ৫ হাজার ৬০১ জন। পাসের হার ৭৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এর মধ্যে ছাত্র ৩ হাজার ৭২২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩ হাজার ৭১৩ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করে ২ হাজার ৮৬১ জন। ছাত্রীদের মধ্যে ৩ হাজার ৬৭৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩ হাজার ৬৬০ জন অংশ নিয়ে পাস করে ২ হাজার ৭৪০ জন।
সিলেট বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫০৭ জন ফেল করেছে। এছাড়া বোর্ডে মোট ফেল করেছে ২৯ হাজার ৬৭ জন শিক্ষার্থী।
বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষায় অংশ নেননি ৭৩ জন এবং ফেল করেছে ২ হাজার ৮৬৪ জন শিক্ষার্থী। মানবিকে বিভাগে পরীক্ষায় অংশ নেয়নি ৪০৭ জন। আর ফেল করেছে ২৪ হাজার ৪৩১ জন। ব্যবসা শিক্ষায় পরীক্ষায় অংশ নেয়নি ২৭ জন এবং ফেল করেছে ১ হাজার ৭৭২ জন।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ফলাফল বিপর্যয়ের পেছনে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল হাওরাঞ্চল সুনামগঞ্জকে দায়ী করলেও পাসের হারের দিকে সুনামগঞ্জ জেলা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে। ফলাফলের পাসের হারে সিলেট ৭২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। সেখানে সুনামগঞ্জ ৭৪ দশমিক ৭২ শতাংশ। এছাড়া পাসের হারে মৌলভীবাজার ৭১ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা হবিগঞ্জের পাসের হার ৭১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এ বছর শতভাগ পাসের হারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে। গত বছর ২৩টি প্রতিষ্ঠানে শতভাগ পাস করলেও এবার ৩১টি প্রতিষ্ঠান শতভাগ পাসের তালিকায় রয়েছে।
এছাড়া ফলাফল বিপর্যয়ে করোনা পরিস্থিতিকে এখনো দায়ী করছেন বোর্ডের এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, করোনাকালের ধাক্কা আমরা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি।
গত দুই বছর ধরে ফলাফল বিপর্যয় কাটিয়ে না উঠতে পারা এবং একই যুক্তি বার বার তুলে ধরার বিষয়ে তিনি যুক্তি পাল্টিয়ে দক্ষ শিক্ষকের অভাব ও মানবিকে বেশি শিক্ষার্থী ফেল করার বিষয়টি ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে দাবি করেন। তবে তা কাটিয়ে উঠতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পরামর্শ দিয়ে আসছেন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৪
এনইউ/আরআইএস