খুলনা: সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেড প্রদান ও স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে মঙ্গলবার (৪ জুন) অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষকরা।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ও দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির আহ্বানে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুবির শিক্ষক সমিতির আয়োজনে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ কর্মবিরতি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
কর্মবিরতি চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চারুকলা স্কুলের আঙিনায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
খুবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. এস এম ফিরোজের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রকিবুল হাসান সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষকরা বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, যারা পেনশনের আওতাভুক্ত নন তাদের সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্ত করাই ছিল মূল লক্ষ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেখানে একটি পেনশন স্কিমের মধ্যে রয়েছেন সেখানে নতুন করে একটি পেনশন স্কিমে তাদের অন্তর্ভুক্তি করা, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রীর সুন্দর পদক্ষেপকে বাধাগ্রস্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন বক্তারা। তাই অবিলম্বে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত না করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো প্রণয়ন এবং সুপার গ্রেড দেওয়ার দাবি জানান আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
অপরদিকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে অন্তর্ভুক্ত না করার দাবিতে আজ মৌন মিছিল করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
মৌন মিছিলটি অদম্য বাংলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের অধিকাংশ সড়ক প্রদক্ষিণ করে হাদী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
এর আগে বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের আহ্বানে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের সহ-সভাপতি উপ-রেজিস্ট্রার দীপক চন্দ্র মণ্ডলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক উপ-রেজিস্ট্রার মো. শহিদুল আলম হাওলাদারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, উপ-রেজিস্ট্রার মো. মিজানুর রহমান মিজু, সহকারী পরিচালক বিমান সাহা, সহকারী রেজিস্ট্রার মিয়া সালাউদ্দিন সুকর্ণ, সহকারী রেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলাম বাবু, কর্মচারীদের পক্ষে পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট কাম কম্পিউটার অপারেটর অমিতাভ ঘোষ প্রমুখ।
এ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধান, শাখা প্রধানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, যারা পেনশনের আওতাভুক্ত নন তাদের সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্ত করাই ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য। আগে থেকেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পেনশনে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, অথচ একটি মহল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে এই সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। তাই বক্তারা অবিলম্বে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত না করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২৪
এমআরএম/এএটি