ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): মাথার উপর পূর্ণ সূর্য। তীব্র গরমে চারদিকে হাঁসফাঁস অবস্থা।
মঙ্গলবার (১১ জুন) বিভাগ ও হলের ফি সনাতন পদ্ধতিতে জমা নেওয়ায় তীব্র ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের।
রেজিস্ট্রার ভবন সূত্রে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম তিন ধাপে সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ফি জমা দিতে হয়। জমার পর শিক্ষার্থীরা অনলাইনে একটি পে-ইন স্লিপ পান। পরে নির্ধারিত বিভাগ বা ইন্সটিটিউট থেকে টাকার রশিদ সংগ্রহ করে বিজ্ঞান ইউনিটের শিক্ষার্থীরা কার্জন হলের অগ্রণী ব্যাংকে এবং কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট এবং ব্যবসা শিক্ষা ইউনিটসহ অন্যান্যরা রেজিস্টার ভবনের সোনালী ব্যাংকে গিয়ে জমা দেন। এরপর শিক্ষার্থীরা হলে এসে টাকার রশিদ সংগ্রহ করেন এবং টিএসসির জনতা ব্যাংকে তা জমা দেন।
রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের সোনালী ব্যাংক, কার্জন হলের অগ্রণী ব্যাংক এবং টিএসসির জনতা ব্যাংকের শাখা ছাড়া অন্য কোনো শাখায় টাকা জমা দেওয়া যায় না। ফলে সারা দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েন।
প্রতিবছর ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে শিক্ষার্থীদের জন্য ইউনিটভিত্তিক আলাদা তারিখ নির্ধারিত থাকত। তবে এবার ৪ জুন প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সবগুলো ইউনিটের শিক্ষার্থীদের ১০ থেকে ১২ জুনের মধ্যে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বলা হয়। সব ইউনিট একত্রে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করায় অন্যান্য বছরের তুলনায় ঢাবিতে ভিড় বেশি হয়।
এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটে ৫ হাজার ৯৬৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মঙ্গলবার বিভাগের নির্ধারিত ফি জমা দিতে বিভিন্ন অনুষদ ও ইন্সটিটিউটে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সারি ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। রেজিস্ট্রার ভবনের সোনালী ব্যাংকের কক্ষ থেকে ভবনের মূল ফটক পেরিয়ে সারিটি সাইন্স ল্যাবরেটরি স্কুলের পূর্ব গেট পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এছাড়া জনতা ব্যাংকের সারি মেট্রোরেল স্টেশন পেরিয়ে খাদ্য ও পুষ্টি ইনস্টিটিউট পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
শিক্ষার্থীরা জানান, সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দিতে কাউকে কাউকে তিন থেকে চার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।
এ বছর ডিজাস্টার সাইন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন চট্টগ্রামের মোহাম্মদ ফাতিন। তিনি বাংলানিউজকে জানান, রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে গিয়ে তাকে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তার কাজ শেষ হয়েছে সাড়ে তিন ঘণ্টা পর। অনলাইনের মাধ্যমে টাকা নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা গেলে অবশ্যই ভালো হতো।
মোহাম্মদ সাকি নামে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে সুযোগ পাওয়া আরেক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, টিএসসিতে সারি দীর্ঘ হলেও সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দিতে সময় বেশি লেগেছে।
মঞ্জুরুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক বলেন, এই নির্ধারিত শাখাগুলো ছাড়া অন্য শাখায় কেন টাক জমা দেওয়া যাবে না, আমি বুঝতে পারছি না। তাছাড়া একটা ফি অনলাইনে নেওয়া গেলে বাকিগুলো অনলাইনে নেওয়ার সুযোগ থাকার কথা, কিন্তু তা নেওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টা মূলত আমাদের না। আমরা পক্ষ হয়ে টাকা সংগ্রহের কাজটা করি। বিভাগ ও হলগুলো অনলাইনে টাকা নিতে চাইলে আমরা সে ব্যবস্থা করে দিতে পারব। আমাদের সে সক্ষমতা আছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় ফি আমরা অনলাইনেই নিচ্ছি। বিভাগ ও হলের ফি তাদের নিজস্ব বিষয়। সেখানে আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারি না। তবে তারা যদি সিদ্ধান্ত নেয়, অনলাইনের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করবে, তাহলে আমরা সে ব্যবস্থা করে দিতে পারি। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয়ে উপাচার্য জানেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৪
এমজে