ঢাকা: নতুন শিক্ষাক্রমে ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
রোববার (৩০ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করা নিয়ে আমরা তড়িঘড়ি করছি না। বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করে আমরা সেটা ঠিক করতে চাচ্ছি। কারণ আমরা এ শিক্ষাক্রমে প্রথম যে পাবলিক পরীক্ষা অর্থাৎ, দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ওপর এসএসসি পরীক্ষা নেব, সেটা ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসে নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছি।
তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ০১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে দশম শ্রেণির বই দেওয়া হবে। যারা ওই বছর দশম শ্রেণিতে পড়বে, তারাই ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে নতুন পদ্ধতিতে মূল্যায়নে (এসএসসি) অংশ নেবে। গত দুদিন ধরে এটা নিয়ে আমরা কাজ করেছি। বইয়ের লেখক, সম্পাদক, পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। বিভিন্ন পক্ষের মতামত নিয়েছি।
নতুন শিক্ষাক্রম অ্যাক্টিভিটি বেইজড লার্নিং উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ পদ্ধতিতে আমরা যথাযথ শিখন ফল অর্জিত হয়েছে কিনা তা মূল্যায়ন করব। সেজন্য এটা নিয়ে তাড়াহুড়োর কিছু নেই।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে সামাজিক চাপ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। এটার একটা রাজনৈতিক অর্থনৈতিক দিক আছে। সেখানে কোচিং, গাইড বই, নানা ধরনের শিক্ষা উপকরণ বিক্রির বিষয় রয়েছে। এটা সামনে এলে সেটা নিয়ে বাণিজ্য শুরু হবে। তাই এত চমক সৃষ্টির প্রয়োজন নেই।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বর্তমানে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, এটা শিখনকালীন মূল্যায়ন। আর জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন শুরু হবে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, গণিত, বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার্থীরা আনন্দের সঙ্গে মূল্যায়নে অংশ নিচ্ছে। এটাকেই আনুষ্ঠানিকভাবে একটি কাঠামোতে রূপ দেওয়া হবে।
সনাতন পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অমাদের পুরোনো যে মূল্যায়ন পদ্ধতি বা পরীক্ষা ছিল, সেটাতে পাস-ফেল দেখিয়ে উপরের শ্রেণিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা কমিয়ে ফেলা হতো। যারা ফেল করত, তারা একই শ্রেণিতে থেকে যেত।
উদাহরণ দিয়ে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, দেখা গেল এবার এসএসসি পরীক্ষায় প্রায় ২৩ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নিল, আমরা সাড়ে ১৬ লাখকে পাস দেখালাম। বাকি প্রায় ৬ লাখ শিক্ষার্থীকে আমরা ফেল বলে দিলাম। কথিত পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা তাদের ছেঁটে ফেললাম। এটার মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীকে নিগৃহীত করলাম, লজ্জা চাপিয়ে দিলাম। এ পদ্ধতি আর রাখা যাবে না।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২৪
এমআইএইচ/এসআরএস