বরিশাল: জ্বলন্ত মোমবাতি হাতে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলের মধ্য দিয়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৃহস্পতিবারের (১১ জুলাই) কর্মসূচি শেষ করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এর ফলে সাড়ে ৩ ঘণ্টা পরে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাত সাড়ে ৭টার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বরিশাল-কুয়াকাটা ও বরিশাল-ভোলা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
এদিকে জ্বলন্ত মোমবাতি হাতে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলের পূর্বে শিক্ষার্থীরা বিকেল ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ও প্রধান ফটক (৩ নম্বর গেইট) এর সামনে জড়ো হতে থাকেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের ভেতরে কর্মসূচি পালনের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এজন্য ওই সময় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের বাইরে বিপুল পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছে।
তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সেই অনুরোধ উপেক্ষা করে গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে ব্যানারসহ মিছিল নিয়ে প্রধান ফটকের সামনে বিকেল ৪টার দিকে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক গিয়ে অবস্থান নেয়। এরপর তারা সড়কের বিভিন্ন অংশে বসে অবরোধ কার্যকর করে। ওই সময় সড়কের বিভিন্ন স্থানে আগুনও জ্বালানো হয়।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (৩ নম্বর গেইট) এর সামনে মহাসড়কে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বসে অবস্থান নেয়। পরে সেখানে তারা প্রজ্বলিত মোমবাতি হাতে নিয়ে আন্দোলন কর্মসূচির স্লোগান দেয়। আর এর পরপরই সেই জ্বলন্ত মোমবাতি হাতে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সুজয় শুভ বলেন, আমাদের শান্ত কর্মসূচি বানচাল করার জন্য পুলিশ সকাল থেকে নানাভাবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হয়রানি করছে। বিকেলে অঘোষিত ১৪৪ জারি করা হয়। শিক্ষার্থীরা যেন রাস্তায় না নামে সেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আমরা মনে করি গণতান্ত্রিক দেশে অহিংসভাবে সমবেত হওয়ার অধিকার সবার আছে। তাতে কেউ বাধা দিতে পারে না। আমরা অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা ভেঙে রাস্তায় এসেছি। অহিংস আন্দোলনে পুলিশ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। যতদিন দাবি আদায় না হবে আমরা ঘরে ফিরব না।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয় যারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দেখছেন তারা বলছেন কোটার নামে বৈষম্য করা উচিত না। শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক আন্দোলন করছেন। বেশিরভাগ মানুষই আগামী প্রজন্মের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য এ আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন। কারণ অধিকাংশ মানুষ কোটার নামে বৈষম্য চায় না।
এদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ আর মুকুল জানান, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।
এদিকে অবরোধের ফলে মহাসড়কের উভয় প্রান্তে যানবাহন আটকে যায়। ফলে সাধারণ যাত্রীদের গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে আন্দোলনস্থল অতিক্রম করে বিকল্প ব্যবস্থায় বাকি গন্তব্যে যেতে হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৪
এমএস/জেএইচ