ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দেওয়া ‘রাজাকার’ স্লোগানের বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। যদিও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে তারা কোনো বক্তব্য দেননি।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামউল হক ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকে বিকৃত করে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের পক্ষে আন্দোলনকারী একদল শিক্ষার্থী যেভাবে গত ১৪ জুলাই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘আমি কে, তুমি কে, রাজাকার-রাজাকার’ বলে স্লোগান দিয়েছে, তা আমাদের ব্যথিত, লজ্জিত ও ক্ষুব্ধ করেছে। এই স্লোগান প্রদানের মধ্য দিয়ে ত্রিশ লাখ শহীদের প্রতি অশ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়েছে। অসম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে দুই থেকে ছয় লাখ নির্যাতিত নারীর প্রতি।
আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পবিত্র ভূমি, যা বাংলাদেশের মহান মুক্তিসংগ্রামে আত্মদানকারী শহীদের রক্তে রঞ্জিত এবং যে বিশ্ববিদ্যালয় মহান মুক্তিযুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে; সেই স্থানে মুক্তিযুদ্ধকালীন হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠন পরিচালনাকারী রাজাকারের পক্ষে স্লোগান প্রদানের তীব্র নিন্দা জানাই। কোনো অজুহাতেই রাজাকারের পক্ষাবলম্বন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের অবমাননা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ গ্রহণ করবে না।
শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, কোটা বাতিলকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভূলুণ্ঠিত করার প্রয়াস রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। মুক্তিযুদ্ধের ধারক ও বাহক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করছি। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে তা নিন্দনীয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করে সবাইকে সংযত থাকার আহ্বান জানাই। আমরা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী এবং রাজাকারদের পক্ষাবলম্বনকারী সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি।
একইসঙ্গে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার করতে সকারের প্রতি আহ্বানও জানান শিক্ষক নেতারা।
সোমবার (১৫ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকশ শিক্ষার্থী আহত হন। কেবল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ২২৬ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২৪
এমজে