বরিশাল: অনির্দিষ্টকালের জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) শিক্ষা কার্যক্রম ও আবাসিক হলসমূহ বন্ধ ঘোষণা করার পর ২৪ ঘণ্টা পার হলেও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসেই অবস্থান করছেন। এমনকি তারা আবাসিক হলগুলোতে যথারীতি আগের নিয়মেই এ অবধি রয়েছেন।
যদিও ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, গেল রাতে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলেও থাকলেও অনেকেই ছিলেন হামলার আতঙ্কে। আর এ কারণে ভোর থেকেই অনেকে ক্যাম্পাসও ছেড়েছেন। তবে এর আগের দিন হল ছাড়ার নির্দেশনার প্রতিবাদে শেরে বাংলা হলের সামনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভও করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, ধারাবাহিক আন্দোলন সুষ্ঠুভাবে চালিয়ে যেতে তারা ক্যাম্পাসেই আছেন এবং থাকবেন। এদিকে নির্দেশনার পরও শিক্ষার্থীদের হলে থাকার বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সকালে প্রক্টরসহ প্রভোস্টরা হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার পরও শিক্ষার্থীরা হলগুলোতে অবস্থান করায় সকালে আমিসহ প্রভোস্টরা সেখানে গিয়েছিলাম। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি, গতকাল দিনভর বরিশালে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় তারা হল ছাড়তে পারেনি বলে জানিয়েছে। আশা করি, আজ বিকেলের মধ্যে সব শিক্ষার্থী হল ছাড়বে।
তিনি আরও বলেন, এরপর কোনো শিক্ষার্থী হলে থাকলে এবং কোনো কিছু হলে আমরা এর দায়-দায়িত্ব নেব না বলে কঠোরভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম জানান, ইউজিসি থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ও আবাসিক হলসমূহ বন্ধ ঘোষণা করা হল। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বুধবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৩টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছেড়ে নিরাপদ আবাসস্থলে অবস্থানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে সর্বশেষ বেলা ১১টায় খবর পাওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে। আর কেন্দ্রীয় কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা মহাসড়কটি অবরোধের প্রস্তুতি নিয়েছে।
অপরদিকে কোটা সংস্কারের আন্দোলন নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাতেন চৌধুরি ও সাধারণ সম্পাদক ড. তারেক মাহমুদ আবির স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছেন, কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা হত-বিহ্বল ও মানসিকভাবে ক্ষত-বিক্ষত। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৪
এমএস/আরবি