রাজশাহী: শিক্ষার্থীরা আল্টিমেটাম দেওয়ার পর পদত্যাগ করেছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রাবি) প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার। তার সঙ্গে পদত্যাগ করেছেন আরও ২০ প্রশাসক ও কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৩ টার দিকে রাষ্ট্রপতির সচিব বরাবর পদত্যাগপত্র প্রেরণ করেছেন রাবি ভিসি।
তিনি নিজেই তার পদত্যাগের তথ্য গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা জনসংযোগ দপ্তর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য বিকেল ৫টা পর্যন্ত জানানো হয়নি।
২০২১ সালের ২৯ আগস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক। তাকে চার বছরের জন্য রাবি উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
এর মধ্যে চাকরির মেয়াদ শেষ হলে অবসর নেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তিনি উপাচার্যের বাকি মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবেন বলে জানানো হয়। তবে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় চ্যান্সেলর প্রয়োজন মনে করলে যে কোনো সময় এই নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছিল।
তার নিয়োগের আগে ওই বছরের ৬ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের মেয়াদ শেষ হয়।
এদিকে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার ছাড়াও ঊর্ধ্বতন ২০ জন প্রশাসক ও কর্মকর্তাও পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগকারী অন্যরা হলেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রণব কুমার পান্ডে, ইংলিশ অ্যান্ড আদার ল্যাঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক শহিদুল আলম, লিগ্যাল সেলের প্রশাসক সাদিকুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসের প্রশাসক সাখাওয়াত হোসেন, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার প্রশাসক অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, শহিদ মীর আব্দুল কাইয়ুম আন্তর্জাতিক ডরমিটরির অর্ডেন আতিউর রহমান।
এছাড়া প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হকসহ প্রক্টরিয়াল বডির সকল সদস্য পদত্যাগ করেছেন।
এর আগে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থী ও জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দলনের সমন্বয়করা। দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (রাবি) ১৭ সদস্য বিশিষ্ট সমন্বয়ক পরিষদ।
ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কাছে আস্থা হারিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্যদ্বয় অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম (প্রশাসন) এবং অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবীরসহ (শিক্ষা) অবৈধ সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করার আল্টিমেটাম দিচ্ছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া মো. মেশকাত চৌধুরী বলেন, আপনারা সবাই দেখেছেন সারাদেশের ছাত্র-জনতা যখন গণমানুষের মুক্তির জন্য তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে সবকিছু বিসর্জন দিচ্ছিল সে সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮,২০২৪
এসএস/এসআইএস