ঢাকা, সোমবার, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

পদত্যাগ করলেন কুবি উপাচার্য আবদুল মঈন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৪
পদত্যাগ করলেন কুবি উপাচার্য আবদুল মঈন

কুমিল্লা: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন।  

রোববার (১১ আগস্ট) রাষ্ট্রপতি বরাবর দেওয়া পদত্যাগ পত্র থেকে বিষয়টি জানা যায়।

 

পদত্যাগপত্রে অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, আমি ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে যোগদান করি। যোগদানের পর আমি আমার অভিজ্ঞতা, সততা, নৈতিকতা, দক্ষতা ও আইন মেনে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি লিডিং ও মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা যায়, সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করি। এজন্য প্রথমেই আমি উদ্ভাবনে নেতৃত্ব, সমাজের ক্ষমতায়ন, উন্নয়ন, মানবকল্যাণ, সম্প্রদায়ের সমৃদ্ধকরণ এবং টেকসই প্ল্যানেট গঠনের অঙ্গীকার নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি ভিশন তৈরি করি। এ ভিশন অর্জনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করি এবং শিক্ষা, শিক্ষণ ও গবেষণার সংস্কৃতি ও পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে একটি মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে রূপান্তর করার জন্য অনেক নুতন স্কিম নিই।

এ স্কিমগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মেধার স্বীকৃতি স্বরূপ ভর্তি পরীক্ষার আয় থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি চালু করা ও উন্নতমানের প্রকাশনার জন্য শিক্ষকদের জন্য সম্মানজনক অ্যাওয়ার্ড চালু করা। তাছাড়া, দীর্ঘ সেশনজট হ্রাসকল্পে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ‘একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করা, উচ্চতর ডিগ্রি শেষে বিদেশে থেকে পদ ধরে রাখার কারণে যে শিক্ষক সংকট তৈরি হয়েছে তাদের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা বাবদ টাকা ফেরত এনে পদ শূন্য করা এবং মানসম্পন্ন গবেষণা ও প্রকাশনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানের বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা ইত্যাদি।

তিনি পদত্যাগপত্রে আরও লিখেন, ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিভিন্ন ক্ষেত্রে গত দুই বছরে নানা সূচকে অনেক সফলতা অর্জন করেছে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার ইমেজ বৃদ্ধি করতে সমর্থ হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, গুচ্ছ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এক নম্বর অবস্থান অর্জনে সক্ষম হয়েছে। বৈশ্বিক এডি ইনডেক্স-এর গবেষকদের তালিকায় যেখানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র কয়েকজন শিক্ষকের নাম ছিল, তা এ দুই বছরে প্রায় ১৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৯০ জনে উন্নীত হয়েছে। তাছাড়া, আমার যোগদানের আগে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এপিএ’তে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল ৪২তম, যা আমরা কঠিন পরিশ্রম করে দুই বছরে ১০ম স্থানে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। তাছাড়া, স্পেন-বেইজড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবমেট্রিক্স গ্লোবাল র‍্যাংকিং অনুযায়ী দুই বছরে আমরা কয়েকশ ধাপ অতিক্রম করেছি। অতি সম্প্রতি প্রকাশিত আন্তর্জাতিক সিমাগো র‍্যাংকিং (যেখানে বাংলাদেশের ৪১টি বিশ্ববিদ্যালয় অন্তভুক্ত হয়েছে) অনুযায়ী বাংলাদেশের ৮ নম্বর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় স্থান করে নিয়েছে। সামগ্রিকভাবে, জাতীয় পর্যায়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় একটি ভালো ইমেজের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

বর্তমানে আমি আমার ব্যক্তিগত কারণে উপাচার্যের পদ থেকে এ পত্রের মাধ্যমে আজ পদত্যাগ করতে আপনার কাছে পদত্যাগপত্র পেশ করলাম। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়ন অব্যাহত থাকুক এ কামনা করছি। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে আমাকে বাধিত করবেন।

এর আগে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ চায়। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে উপাচার্য এবং প্রক্টরিয়াল বডি পদত্যাগ করলেও এখনো পদত্যাগ করেননি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হূমায়ন কবির।

পদত্যাগের ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এরকম কোনো দাবি এখনো পাইনি।

উল্লেখ্য, অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম উপাচার্য। তিনি ইমরান কবির চৌধুরীর স্থলাভিষিক্ত হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৪
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।