খুলনা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দলকানা উপাচার্য। কোথাও কোথাও পদত্যাগ করেছেন প্রক্টর, প্রভোস্টসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রায় সবাই।

দলকানা এসব ভিসিরা পদত্যাগ করলেও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিহির রঞ্জন হালদার ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সোবহান মিয়া স্বপদে বহাল রয়েছেন। এতে ফুঁসে উঠেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

এ দুজন আগামীকাল সোমবার (১২ আগস্ট) পদত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে।

ভিসি ও প্রোভিসির পদত্যাগসহ চার দফা দাবিতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

রোববার (১১ আগস্ট) বিকেলে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি খুলনা-যশোর মহাসড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে অবস্থান কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-

১। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সকল প্রকার রাজনীতি (শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কর্মচারী ও অন্যান্য) নিষিদ্ধকরণ। ভবিষ্যতেও যাতে না আসে এর জন্য যথাসম্ভব পদক্ষেপ নেওয়া ও এ বিষয়ে যথাযথ শাস্তির আদেশ দিয়ে অর্ডিন্যান্সে যোগ করা।

২। ভিসি, প্রোভিসি, ডিএসডব্লিউ বডির অনতিবিলম্বে পদত্যাগ এবং পদত্যাগের পূর্বে সকল ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ, পরবর্তীতে হল এবং ক্লাস চালু করার দিকনির্দেশনা দিয়ে রোববারে মধ্যে নোটিশ প্রদান।

৩। হলে ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।

৪। স্ব স্ব ফ্যাকাল্টির ডিন হেডদের সাথে বসে শিক্ষার্থীদের মতামত সাপেক্ষে আলোচনা করে একাডেমিক কার্যক্রম অব্যাহত করা।

সোমবার দুপুর ১২টায় শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে আবারও প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।

এর আগে দুপুরে ভিসি এবং প্রো-ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকরা ক্যাম্পাসে র‍্যালি ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। দিনভর আন্দোলনে উত্তাল ছিল কুয়েট।

রোববার কুয়েটের সিন্ডিকেট সভায় অনলাইনে যোগ দেন ভিসি। সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভিসি এবং প্রো-ভিসি সোমবার পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত এক সদস্য বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, আওয়ামী লীগের পা-চাটা গোলাম ছিল ভিসি ও প্রোভিসি। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রবল অসহযোগিতা করেছেন তারা। যে কারণে কুয়েট ভিসি এবং তার অণুগতদের পদত্যাগ করতে হবে। কোটা আন্দোলন বিরোধী বিভিন্ন কার্যকলাপ ও তাদের বিরুদ্ধে পাহাড় সমান দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বর্তমানে সবার কাছে প্রশ্নবিদ্ধ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৪
এমআরএম/এমজে