বিষয়টি নিয়ে কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাদের কয়েক দফা বৈঠক করে কোনো ফল না আসায় রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এই ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে সোমাবারও (০১ অক্টোবর) কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারেনি।
ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের এমন কাণ্ডে চরম বেকায়দায় পড়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, যশোর জেলা ছাত্রলীগের একজন নেতা, কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান ও আসাদ হলে অবস্থানরত ছাত্রলীগ নেতা নাহিদুর রহমান নাহিদের নেতৃত্বে কলেজে এই বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম মেধা তালিকাতে থাকা শিক্ষার্থীদের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে ভর্তি হতে বলা হয়। সে অনুযায়ী সরকারি এমএম কলেজে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত ভর্তির সময় নির্ধারণ করা হয়। প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদাভাবে তারিখও নির্ধারণ করা হয়।
ভর্তির প্রথম দিন ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলা, ইসলাম শিক্ষা ও হিসাব বিজ্ঞানের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ১ আক্টোবর ইংরেজি, সমাজবিজ্ঞান ও মার্কের্টিং বিভাগ, ২ অক্টোবর ইতিহাস, ব্যবস্থাপনা ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ৩ অক্টোবর দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ফিন্যান্স, ৪ অক্টোবর অর্থনীতি, ভূগোল ও পরিবেশ এবং প্রাণিবিদ্যা, ৭ আক্টোবর রসায়ন, উদ্ভিদবিজ্ঞান, গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
ভর্তির সময় চার বছরের সেমিনার ফি একসঙ্গেই নেওয়া হচ্ছে। আর এই টাকা থেকে ছাত্রলীগ নেতারা কলেজ প্রশাসনের কাছে ‘নিজেদের ভাগ’ দাবি করেন। কিন্তু কলেজ প্রশাসন ছাত্রলীগের এই অন্যায্য দাবি না মানলে ভর্তির জন্য লাইনে দাঁড়ানো শিক্ষার্থীদের মারধর করে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয় ছাত্রলীগ।
আব্দুর রহিম নামে এক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, কলেজে ভর্তি হতে এসেই বাধার মুখে পড়ি। কেউ কোনো কথা না বলে মারতে শুরু করে। তারা বলে ভর্তি হবে না। ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ। বাড়ি চলে যা। পরে জানতে পারলাম এরা ছাত্রলীগের নেতা। এদের কথা ছাড়া ভর্তি হতে গেলে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে।
রশিদ আহমেদ নামে আরেক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, অনেক দূর থেকে এসেছি। কিন্তু ভর্তি হতে পারলাম না। আবার কবে ভর্তি কার্যক্রম চালু হবে তাও জানি না।
তবে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু তালেব মিয়া ভর্তি কার্যক্রম বন্ধের বিষয়টি স্বীকার করলেও ছাত্রলীগের এ অপতৎপরতার বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কিছু টেকিনিক্যাল সমস্যার কারণে ভর্তি আপাতত বন্ধ করা হয়েছে। অনেক সময় আছে। সব শিক্ষার্থীই ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে।
তবে তিনি এও বলেন, কিছু শিক্ষার্থী আমার কাছে এসেছিল। চার বছরের সেমিনার ফি নেওয়া হচ্ছে এটা জানতে। আমি তাদের সরকারি নির্দেশনা দেখিয়েছি। সেই অনুযায়ী টাকা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, এমএম কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান অভিযোগটি অস্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, কলেজে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে এ ধরনের ঘটনা আমার জানা নেই। ভর্তি বন্ধ করা এটা সম্পূর্ণ কলেজ প্রশাসনের ব্যাপার। এর সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সর্ম্পক নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৮
ইউজি/টিএ