রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি ইউনিটে ৪৫ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারবেন। বিভাগ পরিবর্তনের জন্য আলাদা কোনো ইউনিট নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকরা বলছেন, ভর্তি কমিটির সভায় বেশি শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণমূলক পরীক্ষার জন্য শিফট বাড়ানোর প্রস্তাব অনেকেই সমর্থন করেনি। ফলে সবাইকে সুযোগ দেওয়ার মত ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিভাগ পরিবর্তনের সুযোগে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক আবেদনের পর জিপিএ কম থাকায় বাদ পড়তে পারেন।
শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা যায়, করোনা ভাইরাসের বিশেষ পরিস্থিতির কারণে এবার এইচএসসি পরীক্ষা ছাড়াই জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের অটোপাসের ঘোষণা করা হয়েছে। এবছর মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১ লাখ ২৩ হাজার ৬২০ জন শিক্ষার্থী, মানবিক বিভাগ থেকে ১৯ হাজার ৬৪৪জন শিক্ষার্থী, এছাড়াও ব্যবসা শিক্ষা থেকে ১০ হাজার ৩৩০ জন শিক্ষার্থী।
এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ২৩ হাজার শিক্ষার্থী। মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৯ হাজার শিক্ষার্থী। বিজ্ঞান ইউনিটে পরীক্ষা দিতে পারবেন ৪৫ হাজার ভর্তিচ্ছু। বাকিদের মধ্যে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থীও যদি বিভাগ পরিবর্তনের জন্য রাবির ‘এ’ ইউনিটে আবেদন করে তাহলে প্রাথমিক আবেদনের পর মানবিক বিভাগের অনেকেই বাদ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এইচএসসি পরীক্ষায় মানবিকের চেয়ে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা বেশি নম্বর পেয়ে থাকেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা ‘এ’ (মানবিক), ‘বি’ (ব্যবসা শিক্ষা), ‘সি’ (বিজ্ঞান বিভাগ) ইউনিটে অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষার্থীরা এইচএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে ন্যূনতম যোগ্যতা দিয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদন করতে পারবেন। পরবর্তীতে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রতি ইউনিটে ৪৫ হাজার শিক্ষার্থীকে নির্বাচিত করা হবে।
ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ‘জিপিএ’ ছাড়া শিক্ষার্থীদের বাছাইয়ের জন্য অন্য কোনো পদ্ধতি নেই। ফলে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা সাধারণত জিপিএ কম পাওয়ায় ভর্তি পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। তাদের জন্য ভর্তি কমিটির সভায় শিফট বাড়ানোর প্রস্তাবে সবাই রাজি না থাকায় সেটি করা সম্ভভ হয়নি। তবে আগের ৩২ হাজারের সীমাবদ্ধতা বাড়িয়ে ৪৫ হাজার শিক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, দেশের একটি প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি এখনো সুন্দর কাঠামোতে দাঁড়াতে পারেনি। এটি খুব দুঃখজনক বিষয়। প্রতি বছরেই ভর্তি পরীক্ষায় কোনো না কোনো পরিবর্তন আসে। আর এই বিভিন্ন পরিবর্তনের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক পদ্ধতি এখনো চলছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের স্বার্থে বিচক্ষণতার সঙ্গে একটি সুন্দর কাঠামো প্রয়োজন।
এ বিষয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, এবারের ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আমি খুব একটা সন্তুষ্ট নই। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কয়েকটি শিফটে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেখানে শিফটের সংখ্যা বাড়িয়ে আরো বেশি শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণমূলক পরীক্ষা ব্যবস্থা করা উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪২ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২০
এএটি