বেরোবি (রংপুর): বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর অনিয়ম-দুর্নীতি সরেজমিনে তদন্ত করতে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একটি তদন্ত কমিটি।
রোববার (১৪ মার্চ) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ইউজিসির সদস্য ও তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দের নেতৃত্বে ইউজিসির সিনিয়র সহকারী সচিব ও তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব জামাল উদ্দিন এবং ইউজিসির সদস্য ও তদন্ত কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. আবু তাহের ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছান।
এর আগে ইউজিসির সিনিয়র সহকারী সচিব ও সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব জামাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে গত ০২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষক বরাবর পাঠানো হয়। সেইসঙ্গে এই চিঠির অনুলিপিও দেওয়া হয়েছে উপাচার্যের একান্ত সচিবকেও। এতে ১৪ মার্চ তদন্তকাজ অনুষ্ঠিত হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই চিঠিতে উপাচার্যের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের দালিলিক প্রমাণাদিসহ সাক্ষীদের উপস্থিত থাকার জন্য তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে সাত শিক্ষককে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার তারা তদন্ত করতে এসেছেন। সব অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। প্রতিবেদন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন।
শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমলেশ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রীর কাছে পাঠানো উপাচার্যের বিরুদ্ধে আনীত ৪৫টি অভিযোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা অমান্য করে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক অনুপস্থিতি, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া, ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে জনবল নিয়োগ, শিক্ষক ও জনবল নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়ম, নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ভিসি হয়েও অনুপস্থিতি থাকা, নিরাপত্তাহীন ক্যাম্পাস, ইচ্ছেমত পদোন্নতি, আইন লঙ্ঘন করে একাডেমিক প্রশাসনিক পদ দখল ও ক্রয় প্রক্রিয়ায় নীতিমালা লঙ্ঘন।
অভিযোগকারী সাত শিক্ষক হলেন- পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গাজী মাজহারুল আনোয়ার, রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এইচ এম তারিকুল ইসলাম, ফাইনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খায়রুল কবির, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মশিউর রহমান, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কমলেশ চন্দ্র রায়, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদ এবং অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টির দু’টি ১০তলা ভবন ও একটি স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণকাজে উপাচার্যের অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে ইউজিসির আরেকটি সরেজমিন তদন্ত কমিটি। এজন্য উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওই কমিটির প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক মশিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, নানা অনিয়ম-দুর্নীতির ৪৫টি অভিযোগ শিক্ষামন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর দিয়েছি। রোববার ইউজিসির একটি তদন্ত দল ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছেছেন। তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ প্রমাণসহ কাগজপত্র দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২১
এসআরএস