কুমিল্লা: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) মহান স্বাধীনতা দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে শহীদ মিনারে কোনো প্যান্ডেল না থাকা, খাবার সুষ্ঠু বিতরণ না হওয়া ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের (একাংশ) আলোচনা সভায় অসহযোগিতাপূর্ণ আচরণের অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২৬ মার্চ) সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ অনুষ্ঠানে কোনো ধরনের প্যান্ডেল না থাকায় তপ্ত রোদের কারনে শহীদ মিনারে খালি পায়ে অবস্থান করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছিলো বলে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে শহীদ মিনারে কমপক্ষে একটা প্যান্ডেল করা উচিত ছিল। যাতে রোদের কারণে শহীদ মিনারে অবস্থান অসহনীয় হয়ে না পড়ে।
প্যান্ডেল না থাকায় শহীদ মিনারে রোদের কারণে অবস্থান করতে সমস্যা হয়েছে বিষয়টি স্বীকার করে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক ড. মো. শামীমুল ইসলাম বলেন, শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার পর আমরা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে আলোচনা সভা করবো তাই আমরা শহীদ মিনারে তেমন আয়োজন রাখতে পারিনি।
এদিকে, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে দুপুর ১২টায় টিচার্স লাউঞ্জে বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাংশের (মিজান-নাসির) আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার নানান বিষয়ে আলোচনা চলাকালীন একই রুমে প্রশাসন খাবার বিতরণ করে আলোচনা সভার সুন্দর পরিবেশ নষ্ট করে অসহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাংশের (মিজান-নাসির) সভাপতি ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
এছাড়াও অনুষ্ঠান শেষে খাবার বিতরণে শৃংখলার ঘটতি থাকায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরাও খাবার পায়নি বলে জানা গেছে।
এমনকি একটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অভিযোগ করে বলেন, আজকে যে খাবারের আয়োজন রাখা রয়েছে সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য জানানো হয়নি আমাকে।
এছাড়াও তিনি বলেন, আজকের আয়োজন কোনোভাবেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজন বলে মনে হয়নি। সম্পূর্ণ দায়সারাভাবে এ আয়োজন করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে ড. মো. শামীমুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকরা শিক্ষক লাউঞ্জ ব্যবহার করবে এটা স্বাভাবিক, কিন্তু আমি শিক্ষক সমিতির সভাপতি তারা আমাকে একটিবারও বিষয়টি জানায়নি এটা তারা ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। আর খাবার কম পড়ার কথা নয়, আমরা ২২০টি প্যাকেটের আয়োজন করেছি। এক জায়গা থেকে বিতরণ সম্ভব ছিলো না বলে চার ক্যাটাগরির চারটি বুথ করে বিতরণ করেছি। সেখানে খাবার কম পড়ার কথা নয়।
এছাড়াও ২১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবসে একটি মাত্র ফুল দেয়ার অনুরোধ থাকলেও খোদ রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরই মানেননি এটি। বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে ফুল দিতে দেখা যায় তাকে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান ও শিক্ষক সমিতির সভাপতিসহ বিভিন্ন শিক্ষকও এ নিয়ম অমান্য করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিজ্ঞপ্তিতে একটি মাত্র ফুল দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ ছিল সেটা আমি জানি না, আসলে আমি জানলে এভাবে অংশ নিতাম না।
বাংলাদেশ সময়: ০৫০১ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২১
এসএইচডি/এএটি