ঢাকা, সোমবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ইবিতে টিকা বিড়ম্বনা: ওয়েবসাইটে নেই নিবন্ধনকারীদের তথ্য

তারিকুল ইসলাম, ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২১
ইবিতে টিকা বিড়ম্বনা: ওয়েবসাইটে নেই নিবন্ধনকারীদের তথ্য কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা নিশ্চিত করতে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। তবে সঠিক তথ্য পূরণ করেও নিবন্ধন করতে পারছেন না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

 

তাছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধিত আবাসিক শিক্ষার্থীদের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার কথা থাকলেও তা নেই। ফলে টিকার আবেদন করতে যেয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২ জুলাই রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে টিকার নিবন্ধন সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, ইবির আবাসিক শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণের লক্ষ্যে সঠিক এনআইডি নম্বরসহ সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা সংক্রান্ত ফরম যেসব শিক্ষার্থী পূরণ করেছে তাদেরও অ্যাপে নিবন্ধন করতে বলা হয়।

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর শিক্ষার্থীরা সঠিক এনআইডি নাম্বারসহ বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার পরও নিবন্ধন করতে পারছেন না। অ্যাপসে যেয়ে সঠিক এনআইডি ও অন্যান্য তথ্য দেওয়ার পর ‘দুঃখিত! এই মুহূর্তে আপনি ভ্যাক্সিনের জন্য নির্বাচিত নন’ এ সংক্রান্ত লেখা আসে। তাছাড়া যেসব আবাসিক শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তারা তো আরও বিপাকে পড়েছে।

ত্রুটির কথা প্রশাসনকে জানালে বিষয়টি নিয়ে ইউজিসির সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে বলে জানানো হয়। অফিসিয়াল আদেশ আসার ৮দিন পেরিয়ে গেলেও সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা।  বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তাসনিম ফারহানা বাংলানিউজকে বলেন, গত ৩ তারিখ থেকে এনআইডি নম্বরসহ অন্যান্য তথ্য দিয়ে চেষ্টা করছি নিবন্ধন করার। কিন্তু কোনোভাবেই হচ্ছে না। নির্দেশনা আসার ৮দিনেও এর কোনো সমাধান না হওয়ায় হতাশ আমরা।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মু. আতাউর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সমস্যার কথা আমরা ইউজিসিকে জানিয়েছি। ইউজিসি আমাদের কাছে কয়েকদিন সময় চেয়েছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি এর একটা সমাধান আমরা পাবো।
    
এদিকে গত ৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের এক প্রজ্ঞাপনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো টিকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধিত আবাসিক শিক্ষার্থীদের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।  

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা যেনো তার তথ্য সহজে নিশ্চিত হতে পারেন সে জন্য যে সব আবাসিক শিক্ষার্থীর (সঠিক এনআইডি নম্বরসহ) তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিরেক্টর এমআইএস, ডিজি এইচএ- এ পাঠানো হয়েছে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

যেসব শিক্ষার্থীর তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওই প্রতিষ্ঠানে পাঠানো সম্ভব হয়নি তাদের তথ্য সংগ্রহ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট মেইলে পাঠাতে হবে। সব শিক্ষার্থী (প্রথমে আবাসিক শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে) ভ্যাকসিন পাবেন।

ইউজিসির পক্ষ থেকে ওয়েবসাইটে সে তালিকা প্রকাশের নির্দেশনা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেনি। ওয়েবসাইটে তালিকা প্রকাশ করা হলে শিক্ষার্থীরা সহজেই নিশ্চিত হতে পারতো তাদের তালিকা সম্পর্কে। সেটা না হওয়ায় তথ্যপ্রদানকারী আবাসিক শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সঠিকভাবে নিবন্ধিত কিনা সে ব্যাপারে তারা নিশ্চিত হতে পারছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রায়হান আহমেদ বলেন, টিকার জন্য এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিবন্ধনকৃত আবাসিক শিক্ষার্থীদের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করলে আমরা নিশ্চিত হতে পারতাম আমি বিশ্ববিদ্যালয় হতে নিবন্ধিত কিনা। তালিকা প্রকাশ করলে নিশ্চিত হতে পারতাম সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের জন্য। আর যদি না হই তাহলে ইউজিসি তো পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পুনরায় শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহের নির্দেশনা দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরও আবার নিবন্ধন প্রক্রিয়া করার সুযোগ থাকছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসানুল আম্বিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘টিকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর আবাসিক শিক্ষার্থীদের নিবন্ধনের ডাটাগুলো আমাদের রেডিই আছে। টেকনিক্যাল কারণে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। খুব শিগগিরই আমরা এ তালিকা ওয়েবসাইটে আপলোড করবো।
 
গত ২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করতে তালিকা চেয়েছিল ইবি প্রশাসন। পরে গত ১৪ই মার্চ আবাসিক ও অনাবাসিক সবার তালিকা চেয়ে দ্বিতীয় দফায় প্রজ্ঞাপন জারি করে কর্তৃপক্ষ। তবে আবেদন কম হওয়ায় তৃতীয় বার ২৫শে মে পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ চতুর্থ বারের মতো ৩০শে মে পর্যন্ত আবেদনের মেয়াদ বাড়ায় কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের আহ্বানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক-অনাবাসিক মোট ৬ হাজার ৬০৭ জন শিক্ষার্থী করোনার টিকার জন্য নিবন্ধন করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।