ঢাকা, সোমবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বাড়ি ফিরতে প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে ইবির ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৯ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২১
বাড়ি ফিরতে প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে ইবির ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী

ইবি: কঠোর ‘লকডাউনে’ বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের বিভিন্ন মেসে আটকে পড়া পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী গত এক সপ্তাহ ধরে বাড়ি ফেরার আকুতি জানাচ্ছেন। এ দুই জেলায় করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুর হার প্রতিদিন বেড়ে চলেছে।

এমতাবস্থায় মেসে প্রতিনিয়তই আতঙ্কে কাটছে তাদের দিন।

করোনা থেকে বাঁচতে তারা যে কোনো মূল্যে বাড়ি যেতে চাইছেন। কিন্তু ‘লকডাউনে’র কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দিকেই তাকিয়ে আছেন। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা আগামী ১২ জুলাই শিক্ষার্থীদের গুগল ফরমে তথ্য পূরণের সময় শেষ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থী বান্ধব সিদ্ধান্ত নেবে। বাড়ি যাওয়ার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে তাদের বিভাগীয় শহরে পৌঁছে দেবে এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া এলাকায় অবস্থানরত লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম মোর্শেদ হিমু বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে কোরবানির ঈদের পর হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে আমি রংপুর থেকে চলে আসি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের মেসগুলো শিক্ষার্থীদের তুলনায় অনেক কম। ঈদের পরে এলে থাকার জায়গা পাওয়াটা মুশকিল হয়ে যাবে। সেটা ভেবে আমিসহ আমার বন্ধুবান্ধবরা মেসে চলে আসি। তাছাড়া বাড়ি থেকেও তেমন লেখাপড়া হয় না। কিন্তু হঠাৎ করে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ‘লকডাউনে’র ঘোষণা চলে আসে। দিনে দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি।

দাওয়াহ বিভাগের আল মামুন নামে অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে করোনার উপসর্গ। যে কোনো সময় আমরা নিজেরাই আক্রান্ত হয়ে পড়তে পারি। তাছাড়া শেখপাড়া এলাকায় বেশিরভাগ সময়ই প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়া যায় না। এ অবস্থায় এখানে অবস্থান করাটা আমাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সিদ্ধান্তই পারে আমাদের এ অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে। আমরা প্রশাসনের কাছে জোড় দাবি জানাচ্ছি, প্রশাসন যেন নিজস্ব পরিবহনে আমাদের বিভাগীয় শহরে পৌঁছে দেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে এখনো পজিটিভ আছি। আগামীকাল সকাল ১১টায় শিক্ষার্থীদের গুগল ফরমে তথ্য পূরণের সময় শেষ হবে। এরপর এটা নিয়ে বসব। শিক্ষার্থীদের তালিকা দেখে আমরা পরবর্তী পরিকল্পনা গ্রহণ করব। আগামী ১৪ তারিখ পর্যন্ত ‘লকডাউন’ আছে। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে কী সিদ্ধান্ত হয়, সেটাও আমাদের দেখতে হবে।  

জানা যায়, গত ৭ জুন আটকে পড়া এসব শিক্ষার্থীর বাড়ি যাওয়ার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে বিভাগীয় শহরে পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানিয়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রমৈত্রী। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম শিক্ষার্থীদের তালিকা করে পরবর্তী পরিকল্পনা নেওয়ার কথা বলেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের তালিকা চেয়ে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) থেকে আগামী ১২ জুলাইয়ের মধ্যে গুগল ফরমে শিক্ষার্থীদের আবেদন করার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ১২ জুলাই পর্যন্ত গুগল ফরমে আবেদনকৃত শিক্ষার্থীদের পরিসংখ্যান করে প্রশাসন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানা গেছে। খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী ও কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন মেসে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২১
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।