ঢাকা, বুধবার, ১৪ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

রাবিতে ফিলোসোফিক্যাল সোসাইটির তৃতীয় জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত

রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২২
রাবিতে ফিলোসোফিক্যাল সোসাইটির তৃতীয় জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত

রাবি: ‌‘সুশাসনে নীতিবিদ্যা ও যুক্তিবিদ্যা’- প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বাংলাদেশ ফিলোসোফিক্যাল সোসাইটির (বিপিএস) তৃতীয় জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

শনিবার (২৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে দর্শন বিভাগের আয়োজনে দিনব্যাপী এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

 

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্যদ্বয় অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম ও অধ্যাপক এম হুমায়ুন কবীর ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফজলুল হক উপস্থিত ছিলেন।  

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিপিএস সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মো. সাজাহান মিয়া। সেমিনার বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আরও ছিলেন রাবি দর্শন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নিলুফার আহমেদ।  

সেমিনারের স্বাগত বক্তব্যে বিপিএসের সাধারণ সম্পাদক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. কামরুল আহসান বলেন, বতর্মান সময়ে সুশাসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত নীতিবিদ্যা ও যুক্তিবিদ্যা। সমাজে বিভিন্ন সমস্যা বিরাজমান। এসব সমস্যা নিরসনে সুশাসনের বিকল্প নেই। সেজন্য দরকার নীতি-নৈতিকতা সম্পন্ন একটি জনগোষ্ঠী যারা যুক্তিযুক্ত চিন্তার অধিকারী হবে।  

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এম হুমায়ুন কবীর বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে নীতিবিদ্যা ও যুক্তিবিদ্যার গুরুত্ব অনেক। তাছাড়া জ্ঞানচর্চা, শিক্ষা ও মানব কল্যাণে দর্শন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুশাসন বতর্মান বিশ্বে একটি বহুল আলোচিত বিষয়। সুশাসন ছাড়া জাতির অধিকার সংরক্ষণ সম্ভব নয়। তাই সুশাসনে নীতিবিদ্যা ও যুক্তিবিদ্যা বিষয়ক এই সেমিনার দেশের সার্বিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করি।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, দেশ, জাতি ও মানব কল্যাণে দর্শন একটি প্রাচীন চিন্তাপদ্ধতি। সেটারই অন্যতম শাখা নীতিবিদ্যা ও যুক্তিবিদ্যা। আদর্শবান জাতি গঠনে নীতিবান হওয়া যেমন প্রয়োজন, তেমনি কথা-কাজে যৌক্তিকতা থাকা জরুরি। এটি ছাড়া একজন মানুষ সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে না। অন্যদিকে দেশ ও সমাজ বিনির্মাণে সুশাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রপঞ্চ। শক্তি দিয়ে সবকিছু জয় সম্ভব নয়। নীতিবান ও যুক্তিবাদী জনশক্তি একটি দেশ জাতিকে এগিয়ে নিতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। তাই এই সেমিনার সকলের জন্য নতুন একটি দিক-নির্দেশনা দেবে।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বর্তমান সময়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানের উচ্চ পর্যায়ে উপনীত হওয়ার অন্যতম মাধ্যম দর্শনচর্চা। দর্শন মূলত জ্ঞানের প্রতি অনুরাগ এবং মুক্তচিন্তার প্রসার। তবে এটা করতে গিয়ে যুগে যুগে অনেক দার্শনিক নির্যাতিত হয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে অনেক দার্শনিকের সেই চিন্তাচেতনা সত্য বলে বিবেচিত হয়েছে এবং অনেক জাতি সেটার অনুসরণ করেছেন। সেদিক থেকে ভারতের দর্শন চিন্তা ছিল অনেক সমৃদ্ধ। বৌদ্ধ ও চার্বাকদের দর্শন মানব কল্যাণ ও মুক্তচিন্তার অন্যতম নিদর্শন।  

তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালির মনে মুক্তির যে চেতনার উদয় ঘটিয়েছিলেন, সেটা ছিল তার রাজনৈতিক দর্শন। যার ফলে কৃষক, শ্রমিক, জেলেসহ সর্বস্তরের মানুষ মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাই রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক সব ক্ষেত্রে দর্শনের ভূমিকা রয়েছে৷ সেজন্য সুশাসনের ক্ষেত্রে নীতিবিদ্যা ও যুক্তিবিদ্যার গুরুত্ব রয়েছে।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত তৃতীয় জাতীয় এই সেমিনারে ৯টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের গবেষকসহ প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থী এ সেমিনারে অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।