সিলেট: সিলেটের ১৯ সংসদীয় আসনের চারটি সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরমধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) এলাকা বেড়ে ২৭ ওয়ার্ড থেকে ৪২টি করা হয়েছে।
এ দুটি ইউনিয়নের এলাকা ওয়ার্ডে রূপান্তরিত হওয়াতে অখন্ডতা বজায় রেখে সংসদীয় আসন সিলেট-১ ও সিলেট-৩ আসনের সীমানা নির্ধারণ করেছে ইসি। এছাড়া বিভাগের সুনামগঞ্জ-১ ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সীমানাও পরিবর্তন করা হয়েছে। এজন্য ১৯ মার্চের মধ্যে ক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের লিখিত দাবি, আপত্তি, সুপারিশ ও মতামত নির্বাচন কমিশনে দাখিল করতে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলমের সই করা এক নির্দেশে সিলেটের ১৯ সংসদীয় আসনের চারটি সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ করা হয়। নির্দেশনায় বলা হয়, উক্ত তারিখের পর লিখিত দাবি, আপত্তি, সুপারিশ ও মতামত গ্রহণ করা হবে না।
জানা গেছে, সিলেট-১ আসনের সদর উপজেলার একটি ইউনিয়ন ও তিনটি ইউনিয়নের আংশিক এলাকা সিলেট সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। আগে আসনটি ছিল সিলেট সদর উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকা নিয়ে। প্রাথমিক তালিকায় সদর উপজেলার সঙ্গে সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ২৭ ও ৩১ থেকে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।
অপরদিকে সিলেট-৩ আসনের দক্ষিণ সুরমার দু’টি ইউনিয়ন ও একটি ইউপির আংশিক সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে আসনটিতে রয়েছে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা। প্রাথমিক তালিকায় সিটি করপোরেশনের ২৮-৩০ ও ৪০-৪২ এবং দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া সুনামগঞ্জ-১ আসনের ধর্মপাশা উপজেলার চারটি ইউপি নিয়ে ‘মধ্যনগর’ নামে নতুন উপজেলা গঠিত হয়েছে। ফলে আগের এলাকার সঙ্গে কেবল নতুন করে মধ্যনগর নামটি যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আর সুনামগঞ্জ-৩ আসনের জগন্নাথপুর উপজেলা ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নিয়ে আসনটি গঠিত। তবে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ নাম পরিবর্তন হয়ে এখন শান্তিগঞ্জ হয়েছে। এজন্য প্রস্তাব করা হয়েছে আসনটি গঠিত হবে জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা নিয়ে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবে ইসি। এজন্য জুনের মধ্যেই সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে হাতে নিয়েছে।
সংসদীয় আসনের সীমানায় কোনো পরিবর্তন না এনে রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) একটি প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৩টির আগের সীমানা হুবহু রেখে কেবল সাতটি আসনে নতুন গঠিত প্রশাসনিক এলাকাগুলোর নাম জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে নতুন সিটি করপোরেশন, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডের নামই মূলত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এলাকার কোনো বিস্তৃতি হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন সিলেট বিভাগের চারটি সংসদীয় আসনে পরিবর্তনের প্রস্তাব করলেও আদতে এলাকার কোনো পরিবর্তন নেই। এক্ষেত্রে দাবি-আপত্তি পেয়ে শুনানিতে কোনো আসনের সীমানায় পরিবর্তন হলেই কেবল নতুন সীমানায় ভোট হবে কোনো কোনো আসনে। নয়তো আগের সীমানাতেই অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচনী কর্মকর্তা মো. ফয়সল কাদের বাংলানিউজকে বলেন, বিভাগের ১৯ সংসদীয় আসনের মধ্যে সিলেটের ছয়টির দুটি ও সুনামগঞ্জের দুটি সীমানা হুবহু ঠিক রেখে পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
এনইউ/আরআইএস