ঢাকা: আসন্ন গাজীপুর, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আইনানুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সহযোগিতা করতে সংশ্লিষ্টদেরকে চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সব সিনিয়র সচিব, সচিব ছাড়াও মহাপুলিশ পরিদর্শক; বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি, র্যাব মহাপরিচালক; সব বিভাগীয় কমিশনারকে সম্প্রতি এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন, ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এসব নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তথা সরকারি, আধা-সরকারি, া, আধাস্বায়ত্ত্বশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য থেকে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেসরকারি অফিস বা প্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা প্রয়োজন হবে।
এতে আরও বলা হয়, এসব কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের মধ্য থেকে কারও কারও নির্বাচনে অন্যান্য দায়িত্ব পালনের প্রয়োজন হতে পারে। সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্য থেকে উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ ছাড়াও নির্বাচনে বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হবে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থার স্থাপনা ও অঙ্গন ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
মন্ত্রিপরিষদের চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচনের কাজে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য এবং স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর বিধি ৩) অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব পালনে সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রের যে কোনো ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারবে এবং অনুরূপভাবে নির্দেশিত হলে উক্ত ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষ উল্লিখিত দয়িত্ব পালন বা উক্তরূপ সহায়তা দিতে বাধ্য থাকবে। এ বিধিমালার বিধি ৮৯ অনুযায়ী নির্বাচনের সময়সূচি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার পর ১৫ দিন সময় অতিক্রান্ত না পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে অন্যত্র বদলি করা যায় না।
চিঠিতে আরও বলা হয়, নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ অনুসারে কোনো ব্যক্তি নির্বাচন সংক্রান্ত কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে, তিনি তার উক্তরূপ নিয়োগের পর নির্বাচনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত তার চাকরির অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রেষণে চাকরিরত আছেন বলে গণ্য হবেন।
নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা প্রদান সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৫ অনুসারে সরকারের নির্বাহী কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট সবার কর্তব্য বলেও চিঠিতে বলা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, এ অবস্থায় উল্লিখিত নির্বাচন অনুষ্ঠানের কাজে অর্পিত দায়িত্ব আইন ও বিধি অনুযায়ী পালনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য সরকারের সব মন্ত্রণালয়/বিভাগকে তাদের আওতাধীন সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এতে আরও বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৫ অনুচ্ছেদ ও ৪৪ এবং নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ এর অনুসারে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ১৫ দিন অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ ব্যতিরেকে নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলি করা যাবে না। সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাকে নির্বাচনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীকে ছুটি দেওয়া এবং অন্যত্র বদলি করা হতে বিরত থাকতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠিতে এসব নির্দেশনা জারিসহ আনুষঙ্গিক কার্যাদি সম্পন্ন করে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত, আধাস্বায়ত্ত্বশাসিত, বেসরকারি দপ্তর, সংস্থা, প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীকে সংশ্লিষ্ট আইনের বিধান সম্পর্কে সচেতন থেকে নির্বাচনি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৪ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২৩
এমআইএইচ/এসআইএ