ঢাকা: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) চলছে ভোটগ্রহণ। তবে ভোটগ্রহণে ধীরগতির কারণে দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ভোটারদের।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সরেজমিনে টঙ্গী সরকারী হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দুটি (৪৫১ ও ৪৫২) কেন্দ্রে এমন চিত্র দেখা গেছে।
৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের টঙ্গী সরকারী হাসপাতালের পুরাতন ভবনের এই দুই কেন্দ্রে শুরুর এক ঘণ্টায় ভোট পড়ে মাত্র ১২৮টি। অথচ ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ২৪৮।
এমনটি জানান দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা। পাশাপাশি মেশিন অনেক ভোটারের ফিঙ্গার (আঙুলের ছাপ) নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ ওঠে।
কেন্দ্র দুটিতে সকাল থেকেই ভোটার উপস্থিতি ছিল উল্লেখ করার মতো। কেন্দ্রের চারপাশে প্রার্থীদের সমর্থকদের ভোট বুথ নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। ভোটাররা সেখানে এসে তাদের ভোটের সিরিয়াল নম্বর জেনে নেন।
সিরিয়াল নম্বর জেনে ভোট দেওয়ার লাইনে দাঁড়ান ভোটাররা। এই দুই কেন্দ্রে বুথের সংখ্যা ১০টি। প্রতিটি বুথের সামনে ভোটারদের অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়।
৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের তরুণ ভোটার মো. ইমরান হোসেন আকিব এবারই প্রথম ইভিএমে ভোট দিলেন। সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি ভোট দিতে আসেন। প্রায় চল্লিশ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট দিতে পেরেছেন তিনি।
৪৫২ নম্বর ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. মওদুদ আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ভোটাররা ঠিকমতো কেন্দ্রে আসছেন। তারা স্বাভাবিকভাবেই ভোট দিচ্ছেন। কোন কক্ষে ভোট দেবেন, তা নিয়ে কিছুটা সময় লাগছে। যেহেতু বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে, তাই আশা করছি সবাই সঠিকভাবে ভোট দিতে পারবেন। আমাদের এখানে বিশৃঙ্খলার কোনো সুযোগ নেই। মানুষ স্বাভাবিকভাবে ভোট দিচ্ছেন।
৪৫১ নম্বর ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সকালে যারা ভোট দিয়েছিলেন তারা ইভিএমে ভোটের জন্য অভ্যস্ত ছিলেন না। সে কারণে তাদের ভোট দিতে কিছুটা সময় লেগেছে। যারা ভোট দিয়েছেন, তারা বাইরে গিয়ে অন্যদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছেন যে কীভাবে ভোট দিতে হয়। এ কারণে সকালে ভোট দিতে সময় বেশি লাগলেও এখন সবাই দ্রুত দিতে পারছেন। আমাদের কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ইভিএম মেশিনে কোনো ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়নি। সব শ্রেণীর মানুষই ভোট দিতে আসছেন। তবে তুলনামূলক বয়স্ক ভোটারের সংখ্যা বেশি। তরুণ ভোটারের সংখ্যা কম।
রাজধানীর পাশের গাজীপুর সিটি নির্বাচন নানা কারণে সারাদেশে আলোচিত। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে যেমন উৎসাহ আছে, তেমনই আছে নানা শঙ্কা।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মোট ৫৮টি ওয়ার্ডে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪৮০টি। ভোট কক্ষ রয়েছে ৩ হাজার ৪৯৭টি। মোট ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৯৬ জন ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। নির্বাচনে মেয়র পদে ৮ জন, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন এবং সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জনসহ মোট ৩৩৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান নৌকা, স্বতন্ত্র জায়েদা খাতুন টেবিলঘড়ি, সরকার শাহানুর ইসলাম রনি হাতি, হারুন অর রশিদ ঘোড়া, গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম মাছ, জাপার এম এম নিয়াজ উদ্দিন লাঙ্গল, ইসলামী আন্দোলনের গাজী আতাউর রহমান হাতপাখা, জাকের পার্টির রাজু আহম্মেদ গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৯ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৩
ইএসএস/এনবি/এসজেএ/আরএইচ