কক্সবাজার: কক্সবাজার পৌরসভার ১২ জুনের নির্বাচন নিয়ে জমে উঠেছে প্রচার প্রচারণা।
তবে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী (মাবু), একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসেদুল হক রাশেদের মারমুখী প্রচারণায় শঙ্কিত সাধারণ ভোটাররা।
এরা ছাড়াও মেয়র পদে মাঠে রয়েছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী জগদীশ বড়ুয়া পার্থ ও ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. জাহেদুর রহমান। বিএনপি-জামায়াতের দলীয় কোনো প্রার্থী নেই।
ভোটাররা বলছেন, বিএনপি এবং জামায়াত কোনো প্রার্থী দেয়নি। এছাড়া আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী সরওয়ার কামাল প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তাই আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সাংগঠনিক সম্পাদকের মাঝে লড়াইটা হবে হাড্ডাহাড্ডি। তবে ভোটের মাঠে দুই প্রার্থীর একে অপরের প্রতি বিষোদ্গার,মারমুখী অবস্থানের কারণে সাধারণ ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানান অনেকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা জানান, নানা বিতর্কের কারণে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র মুজিবুর রহমান দলীয় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েন। দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয় মাহাবুবুর রহমানকে। এরই মধ্যে প্রার্থী হিসেবে মাঠে নামেন কক্সবাজারের এক সসময়ের আওয়ামী লীগের কাণ্ডারি মুক্তিযোদ্ধা ও আমৃত্যু আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে থাকা একেএম মোজাম্মেল হকের বড় ছেলে রাশেদ। পৌরসভার ১,২,৩ নম্বর ওয়ার্ডকে ভোটব্যাংক মনে করে সহজ জয়ের আশা করছেন রাশেদ।
অপর-দিকে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া মাহবুবুর রহমানেরও আওয়ামী লীগে দীর্ঘদিনের শক্ত অবস্থান রয়েছে। ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে শুরু করে বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। একদম তৃণমূল থেকে উঠে আসা ভোটের মাঠে মাহবুবুর রহমানের জনপ্রিয়তাও কম নয়। তিনি তিন তিন বার নির্বাচিত কাউন্সিলর এবং একাধিক বার ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘সাতকানিয়া-লোহাগড়া সমিতি’র সভাপতির দায়িত্বেও আছেন মাহবুবুর রহমান।
তবে এ দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর বর্তমান মারমুখী প্রচারণাকে সাধারণ ভোটারেরা ভোটের নামে নোংরা রাজনীতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন। তাদের এ ধরনের আচরণের কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরম আকার ধারণ করেছে বলে মনে করেন অনেকে। প্রার্থী ও সমর্থকদের এমন প্রচার প্রচারণায় বিরক্ত সাধারণ মানুষ।
নৌকার প্রার্থী মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমি চেষ্টা করছি দলের সবাইকে নিয়ে প্রচারণা চালাতে। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নিবার্চন করছেন রাশেদ। এতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু তারা টাকা দিয়ে ভোটারদের কিনতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
মাহাবুবুর আরও বলেন, আমার জন্ম কক্সবাজারে। আমার বাবা ব্যবসায়ী হিসেবে এ অঞ্চলের পরিচিত মুখ। তাই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সাধারণ মানুষ নৌকাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে।
নাগরিক কমিটির প্রার্থী মাসেদুল হক রাশেদ বলেন, জনগণই আমাকে ভোটে নামিয়েছে। জনগণ ভোট দিতে পারলে আমার বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। আমার বাবা মোজাম্মেল হকের দেখানো পথে পৌরবাসীর সেবায় থাকতে চাই।
রাশেদের অভিযোগ, নৌকার প্রার্থী ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাদের বিরুদ্ধে নানা প্রচারণা চালাচ্ছেন।
কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, কক্সবাজার পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৯৪ হাজার ৮০২ জন। পুরুষ ভোটার ৪৯ হাজার ৮৭৯ ও নারী ভোটার ৪৪ হাজার ৯২৩ জন। ১২টি ওয়ার্ডের ৪৩টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে।
কক্সবাজার পৌরসভার সবশেষ নির্বাচন হয় ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই। ওই নির্বাচনে মেয়র হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুজিবুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০১ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২৩
এসবি/এসআইএস