ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১০টি সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন এনেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে সংসদীয় আসনের সীমানার চূড়ান্ত গেজেটও প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমের বৃহস্পতিবার (১ জুন) স্বাক্ষরিত ওই গেজেট বিশ্লেষণে মোট ১০টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন পাওয়া গেছে। এছাড়াও নতুন করে প্রশাসনিক এলাকায় সৃষ্টি হওয়ায় সাতটি আসনের পুনর্বিন্যাসও হয়েছে।
যে আসনগুলো সীমানা পুনর্নির্ধারণ হয়েছে, সেগুলো- পিরোজপুর-১ ও ২, গাজীপুর ২ ও ৫, ফরিদপুর ২ ও ৪, কুমিল্লা ১ ও ২ এবং নোয়াখালী ১ ও ২ আসন।
পিরোজপুর-১ আসন আগে পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল। এ আসনের সীমানা পরিবর্তন করে নেছারাবাদ উপজেলা বাদ দিয়ে ইন্দুরকানী উপজেলা যোগ করা হয়েছে। ইন্দুরকানী উপজেলা আগে পিরোজপুর-২ আসনের অংশ ছিল।
এদিকে নেছারাবাদ উপজেলা পিরোজপুর-২ সংসদীয় আসনের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড গাজীপুর-২ আসনের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে। ওই ওয়ার্ড গাজীপুর-৫ আসনের সঙ্গে ছিল।
ফরিদপুর-২ আসন থেকে সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন এটি ফরিদপুর-৪ আসনে যোগ করা হয়েছে।
কুমিল্লা-১ আসন থেকে মেঘনা উপজেলাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যোগ করা হয়েছে তিতাস উপজেলাকে। আর কুমিল্লা-২ আসনে যোগ করা হয়েছে মেঘনা উপজেলাকে।
নোয়াখালী-১ আসনের থেকে নতুন করে বজরা ইউপি বাদ দেওয়া হয়েছে, যা যোগ করা হয়েছে নোয়াখালী-২ আসনে।
এদিকে যে আসনগুলোর সীমানা পরিবর্তন না হলেও প্রশাসনিক কারণে পুনর্বিন্যাস হয়েছে সেগুলো- ময়মনসিংহ-৪, মাদারীপুর-৩, সুনামগঞ্জ-১, সুনামগঞ্জ-৩, সিলেট ১, সিলেট-৩ ও কক্সবাজার-৩ আসন।
ময়মনসিংহ-৪ আসন: বর্তমানে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নিয়েই আসনটি রয়েছে। সিটি করপোরেশন নতুন হওয়ায় এই নামটি কেবল যোগ হয়েছে।
মাদারীপুর-৩ আসন: কালকিনি উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে ‘ডাসার’ নামে নতুন একটি উপজেলা সৃষ্টি হওয়ায় কালকিনি, ডাসার ও মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন নিয়ে আসনটি ঠিক করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ-১ আসন: ধর্মপাশা উপজেলার চারটি ইউপি নিয়ে ‘মধ্যনগর’ নামে নতুন উপজেলা গঠিত হয়েছে। ফলে আগের এলাকার সঙ্গে কেবল নতুন করে মধ্যনগর নামটি যুক্ত করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ-৩ আসন: জগন্নাথপুর উপজেলা ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নিয়ে আসনটি গঠিত। দক্ষিণ সুনামঞ্জ নাম পরিবর্তন হয়ে এখন শান্তিগঞ্জ হয়েছে। এজন্য আসনটি গঠিত হয়েছে জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা নিয়ে।
সিলেট-১ আসন: সদর উপজেলার একটি ইউনিয়ন ও তিনটি ইউনিয়নের আংশিক এলাকা সিলেট সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। আগে আসনটি ছিল সিলেট সদর উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকা নিয়ে। প্রাথমিক তালিকায় সদর উপজেলার সঙ্গে সিটি করপোরেশনের ১-২৭ ও ৩১-৩৯ নম্বর ওয়ার্ড যুক্ত করা হয়েছে।
সিলেট-৩ আসন: দক্ষিণ সুরমার দুটি ইউনিয়ন ও একটি ইউপির আংশিক সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে আসনটিতে রয়েছে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা। চূড়ান্ত তালিকায় সিটি করপোরেশনের ২৮-৩০ ও ৪০-৪২ এবং দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা রাখা হয়েছে।
কক্সবাজার-৩ আসন: সদর উপজেলার পাঁচটি ইউপি নিয়ে ‘ঈদগাঁও’ নামে নতুন উপজেলা গঠন হয়েছে। এ আসনটি কক্সবাজার সদর ও রামু উপজেলা নিয়ে গঠিত। এক্ষেত্রে তালিকায় ঈদগাঁও নামটি জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি খসড়া তালিকা প্রকাশ করে ইসি। সে সময় গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল ১৯ মার্চের মধ্যে আপত্তি থাকলে উত্থাপন করতে হবে। এতে ৩৮টি আসনে মোট ১৮৬টি দাবি-আপত্তির আবেদন জমা পড়ে। পরবর্তীতে ৩ থেকে ১৪ মে পর্যন্ত চারটি পৃথক দিনে আবেদনগুলোর শুনানি করে নির্বাচন কমিশন। এতে ‘অল্প’ কয়েকটি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি।
চলতি বছর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে চূড়ান্ত এ সীমানার তালিকা অনুযায়ী নির্বাচন হবে।
৩০০ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানা দেখতে ক্লিক করুন:
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২৩
ইইউডি/এএটি