ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

দুই আসনে উপ-নির্বাচন: প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০২৩
দুই আসনে উপ-নির্বাচন: প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা

ঢাকা: আসন্ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও লক্ষ্মীপুর-৩ শূন্য আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থীর যোগ্য-অযোগতা নির্ধারণ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সে অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়নপত্র বাছাই করবেন।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে।

ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে- আদালত থেকে কোনো ব্যক্তি যদি ’অপ্রকৃতিস্থ’ বলে ঘোষিত হন, তবে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।

সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার যোগ্য-অযোগ্যতার বিধানে এমনটিই বলা হয়েছে সংবিধানেও। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের দফা ১ ও ২ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হলে ও ২৫ বছর বয়স হলে সংসদের সদস্য নির্বাচিত হতে এবং সংসদ সদস্য থাকতে পারবেন। এটিকে যোগ্যতা হিসেবে ধরা হচ্ছে।

আবার এ যোগ্যতা থাকলেও অন্য কারণে একজন ব্যক্তি অযোগ্য হতে পারেন। এক্ষেত্রে কোনো উপযুক্ত আদালত থেকে তিনি অপ্রকৃতিস্থ হিসেবে ঘোষিত হলে, দেউলিয়া হওয়ার পর দায় থেকে অব্যাহতি না পেলে, কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করলে কিংবা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করলে তা অযোগ্যতা হিসেবে গণ্য হবে। তবে পরে যদি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন কিংবা পুনরায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন, তবে অযোগ্য হবেন না।

কোনো ব্যক্তি নৈতিক স্খলনজনিত কারণে কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ড পেলে, কারাভোগের পর পাঁচ বছর সময় অতিবাহিত না হলে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না।

এছাড়া ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীনে যেকোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হয়ে থাকলে এবং প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে আসীন থাকলেও সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য হতে হবে।

ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১১ অক্টোবর, বাছাই ১২ অক্টোবর। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা যাবে ১৩ থেকে ১৭ অক্টোবর, আপিল নিষ্পত্তি হবে ১৮ অক্টোবর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ অক্টোবর। প্রতীক বরাদ্দ ২০ অক্টোবর। ভোটগ্রহণ হবে ৫ নভেম্বর।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন জেলা প্রশাসক। তাকে সহায়তা করবেন সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

অন্যদিকে লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা।

সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। কোনো সিসি টিভি ব্যবহার করা হবে না। স্বচ্ছ বাক্সে ব্যালটে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

ব্রাহ্মবাড়িয়া-২ আসনে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আব্দুস সাত্তার ভূঞা ও লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামাল রাজধানীর একটি হাসপাতালে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে মৃত্যুবরণ করেন। এরপর জাতীয় সংসদ সচিবালয় আসন দুটি শূন্য ঘোষণা করে গত রোববার (১ অক্টোবর)। পরে মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) তফসিল দেয় ইসি।

উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা ১৯৭৯ সালে তৎকালীন কুমিল্লা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ও জুনের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন ৪ দলীয় জোট সরকার থেকে টেকনোক্র্যাট হিসেবে আবদুস সাত্তার আইন, মৎস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন পান। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে তিনি নিষ্ক্রিয় ছিলেন। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন। ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হলে উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র থেকে জয়লাভ করে ফের সংসদে আসেন তিনি।

অন্যদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম শাহজাহান কামাল ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২৩
ইইউডি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।