ঢাকা: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তারাও রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব চান। এক্ষেত্রে বাছাই করে এই দায়িত্ব দেওয়ার দাবি তুলেছেন তারা।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, সরকার উপসচিব পদ মর্যাদার কোনো কর্মকর্তাকে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের বিধান রয়েছে। তবে প্রশাসনিক কর্তৃত্ব বিবেচনায় নির্বাচন কমিশন প্রশাসন ক্যাডার থেকেই প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক (ডিসি) এই দায়িত্ব পেয়ে থাকেন। অন্যান্য ক্যাডার থেকেও কখনো এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয় না।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, সংসদ নির্বাচনে জেলাভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। আর ডিসি জেলার প্রধান হওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে তার কর্তৃত্ব বেশি মনে করে কমিশন। যে কারণে প্রতিটি সংসদের সাধারণ নির্বাচনে তারাই গুরুত্ব পান।
স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের আইন হওয়ার পর ইসির পদ বিন্যাসেও সংশোধন আনা হয়। এক্ষেত্রে সংস্থাটির উপ-সচিবরাই জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন। কাজেই তারা সংসদ নির্বাচন নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হওয়ার যোগ্য বলে মনে করেন নিজেদের।
১/১১ সরকারের সময়কার এটিএম শামসুল হুদার কমিশন বেশ কিছু উপ-নির্বাচনে নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেন।
এরপর প্রতিটি কমিশন জাতীয় সংসদের বেশি সংসদের অধিকাংশ উপ-নির্বাচনে ডিসিদের পরিবর্তে নিজস্ব কর্মকর্তাদের পদটিতে দায়িত্ব দেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় এবারও তারা সাধারণ নির্বাচনে এ দায়িত্বটি দেওয়ার দাবি জানাল।
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) বেগম রাশেদা সুলতানা জানিয়েছেন, শনিবার (০৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত মাঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এ আলোচনা হয়।
তিনি বলেন, ‘মিক্সড (ডিসিদের সঙ্গে তারাও) করে রিটার্নিং কর্মকর্তা হতে চান। এটা সত্যি কথা রিটার্নিং কর্মকর্তা অ্যাডমিন ক্যাডার থেকে দেওয়া হয়। ওদের দাবি সব দেওয়ার মতো অ্যাবিলিটি নেই। তবে বাছাই করে কিছু দেওয়া যায়, ওরা ওইরকম কিছু চাচ্ছে। আমাদের কিছু দিলে সম্মানিত বোধ করি। তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে বসব। তবে এখনও কংক্রিট সিদ্ধান্ত হয়নি। ’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন আয়োজিত সংলাপেও বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়ার সুপারিশ আসে। এমনকি সাবেক নির্বাচন কমিশনারও এই পরামর্শ দেন।
গত বছরের ১২ জনু অনুষ্ঠিত সংলাপে অংশ নিয়ে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা বলেন, ‘এখন নির্বাচনের পরিস্থিতি ভিন্নতর। তাই ডিসিদের পাশাপাশি নিজস্ব যোগ্য কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে। ’
সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহমুদ তালুকদার বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা না করে নিজস্ব জনবল দিয়ে করতে হবে।
তবে এ নিয়ে বর্তমান কমিশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য বলেছেন, উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা তো সরকারের অন্য দপ্তরেও আছে। তাই কেবল ডিসি নয়, তাদের ভেতর থেকেও রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। এখনো এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আসেনি। আমরা সবকিছু নিয়েই ভাবছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২৩
ইইউডি/এসএএইচ