ঢাকা: লক্ষ্মীপুরের আলোচিত উপ-নির্বাচনের বিজয়ী প্রার্থী মোহাম্মদ গোলাম ফারুক (পিংকু) নির্বাচন কমিশনে (ইসি) গেজেট প্রকাশের জন্য ধর্না দিচ্ছেন, যে নির্বাচনে কারচুপি নিয়ে চলছে তদন্ত।
রোববার (৫ নভেম্বর) লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
সিল মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে বুধবারের (৮ নভেম্বরের) মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে।
তদন্ত কমিটি গঠনের পরের দিনই পিংকু হাজির হলেন নির্বাচন ভবনে। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) তিনি সাংবাদিকদের বলেন, একজন নির্বাচন কমিশনার তার পূর্ব পরিচিত। একসঙ্গে হজ নিয়ে কাজ করেছেন। তাই তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন।
ভোটে অবৈধভাবে ব্যালটে সিল মারার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আজাদ ছাত্রলীগের কেউ নন। ছাত্রশিবিরের লোক। বিতর্কিত কাজ করেছেন বলে তাকে আরও আগেই বহিষ্কার করা হয়েছে। শিবির করার অভিযোগেই তাকে বহিষ্কার করা হয়।
লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের এ সভাপতি আরও বলেন, আমাদের বিতর্কিত করার জন্য আজাদ টাকার বিনিময়ে এসব কাজ করেছেন। জাতীয় নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এসব কাজ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুর উপ-নির্বাচনে সিল মারা প্রশ্নে মুখে কুলুপ ইসির
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে নির্বাচনী ফলের প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। গেজেট প্রকাশের জন্য সেই ফল নথিতেও উপস্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে নির্বাচনের কারচুপির অভিযোগ এনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওই নির্বাচনের লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মুহাম্মদ রাকিব হোসেনও আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি একটি অভিযোগ দিয়েছি। আমার অভিযোগ যে সত্য, তা ভিডিও ভাইরাল হওয়ার মধ্য দিয়েই প্রমাণিত হয়েছে। এখন ইসির উচিত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার (৬ নভেম্বর) লক্ষ্মীপুর উপ-নির্বাচনের যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, এতে দেখা যায়, সাদা রঙের পাঞ্জাবি পরা এক ব্যক্তি ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে একের পর এক সিল মারছেন।
আরও পড়ুন: নৌকায় ৫৭ সেকেন্ডে ৪৩ সিল মেরে ভাইরাল ছাত্রলীগ নেতা
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, যিনি সিল মেরেছেন, তার নাম আজাদ হোসেন। তিনি লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। তবে সম্প্রতি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করে জেলা ছাত্রলীগ।
লক্ষ্মীপুর-৩ উপ-নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির মুহাম্মদ রাকিব হোসেন, নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. সামছুল করিম ও আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সেলিম মাহমুদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই আসনে মোট ভোটার চার লাখ তিন হাজার ৭৪৪ জন। ১১৫টি ভোটকেন্দ্রের ৮২৭টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ গোলাম ফারুক পিংকু এক লাখ ২০ হাজার ৫৯৯ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। ভোট পড়ে ৩১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন তিন হাজার ৮৪৬ ভোট।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২৩
ইইউডি/আরএইচ