বরিশাল: বরিশাল জেলার ছয় আসনে ৫৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ১০ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে এখন বৈধ প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন ৪৫ জন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে দাখিল করা হলফনামার তথ্যানুযায়ী, এ ৪৫ প্রার্থীর মধ্যে ২৭ জনের নামে অতীত ও বর্তমানে কোনো ফৌজদারি মামলা নেই।
তবে বাকি ১২ জনের নামে অতীতে ছিল, যেগুলোতে তারা খালাস পেয়েছেন নয়তো নিষ্পত্তি বা প্রত্যাহার হয়েছে। আর ছয়জনের নামে বর্তমানে ফৌজদারি আইনে মামলা চলমান।
বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর নামে বর্তমানে কোনো ফৌজদারি মামলা নেই। আগে অস্ত্র আইনে ও দুর্নীতি দমন আইনসহ বিভিন্ন ধারায় দায়ের হওয়া ১০টি মামলা থেকেই তিনি খালাস ও অব্যাহতি পেয়েছেন।
এ আসনে জাতীয় পার্টির ছেরনিয়াবাত সেকান্দার আলীর নামে অতীতে কোনো মামলা না থাকলেও বর্তমানে ওষুধ আইনের একটি মামলা চলমান। আর এনপিপির মো. তুহিনের নামে বর্তমানে কোনো মামলা না থাকলেও অতীতে মানবপাচার আইনে দায়ের হওয়ার একটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি।
বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার মো. ইউনুসের নামে বর্তমানে কোনো ফৌজদারি মামলা নেই। তিনি আগের দ্রুতবিচার আইনের একটিসহ দুটি মামলায় খালাস পেয়েছেন।
এ আসনের অপর প্রার্থী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি রাশেদ খান মেননের নামেও বর্তমানে কোনো মামলা নেই। তার আগের একটি মামলা প্রত্যাহার হয়েছে। একটি মামলা ফল অসমাপ্ত বা ফলহীন আর দুটিতে জেল-জরিমানার রায় হয়েছিল।
জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেনের নামে দুটি ফৌজদারি মামলায় উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ বহাল রয়েছে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মনিরুল ইসলামের নামে বর্তমানে কোনো মামলা নেই। এমনকি তিনি আগের দুটি মামলা থেকেই অব্যাহতি পেয়েছেন।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নকুল কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির অপর প্রার্থী মো. জহুরুল ইসলাম, জাকের পার্টির স্বপন মৃধা, এনপিপির সাহেব আলী, তৃণমূল বিএনপির মো. শাহজাহান সিরাজ, জাতীয় পার্টির অপর প্রার্থী রজিত কুমার বাড়ৈ, স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে ফাইয়াজুল হকসহ সাতজনের নামে অতীত ও বর্তমানে কোনো মামলা নেই।
বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সরদার মো. খালেদ হোসেনের নামে বর্তমানে কোনো ফৌজদারি মামলা নেই। তিনি আগের সাতটি মামলায় খালাস পেয়েছেন এবং শ্রম আইনের একটি মামলা থেকে নিষ্পত্তি পেয়েছেন।
এ আসন থেকেও প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি রাশেদ খান মেনন। তার নামে বর্তমানে কোন মামলা নেই। আগের একটি মামলা প্রত্যাহার হয়েছে। একটি মামলার ফল অসমাপ্ত বা ফলহীন আর দুটিতে জেল-জরিমানার রায় হয়েছিল।
এ আসনের প্রার্থী জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপুর নামে বর্তমানে কোনো মামলা নেই। আগের তিনটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি।
এ আসনের ৯ প্রার্থীর মধ্যে তৃণমূল বিএনপির শাহানাজ হোসেন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির টিপু সুলতান, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. আজমুল হাসান জিহাদ, জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আমিনুল হক ও মো. আতিকুর রহমান -এ ছয়জনের নামে অতীত ও বর্তমানে কোনো মামলা নেই।
বরিশাল-৪ (মেহেন্দিগঞ্জ-হিজলা) আসনে জাতীয় পার্টির মিজানুর রহমানের নামে অতীত ও বর্তমানের কোনো মামলা নেই। তবে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের হৃদয় ইসলাম চুন্নুর নামে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের একটি মামলা চলমান রয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ নাথের নামে বর্তমানে কোনো মামলা নেই। আগের দুটি মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন।
বরিশাল-৫ (বরিশাল সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর নামে বর্তমানে কোনো মামলা নেই। আগের দুটি মামলা থেকেই খালাস পেয়েছেন। এ আসনের অন্য প্রার্থী জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেনের নামে দুটি ফৌজদারি মামলায় উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ বহাল রয়েছে।
বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. আসাদুজ্জামানের নামে সাইবার ট্রাইবুন্যালে একটি মামলা চলমান, আগের দুটি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ কংগ্রেসের মাহাতাব হোসেনের নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনসহ দুটি মামলা চলমান।
এ আসনে আট প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহিদ ফারুক, জাকের পার্টির মো. আবুল হোসাইন, এনপিপির আব্দুল হান্নান সিকদার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সালাহউদ্দিন রিপন- এ চারজনের নামে অতীত ও বর্তমানের কোনো মামলা নেই।
বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল হাফিজ মল্লিকের নামে বর্তমানে কোনো মামলা নেই। আগের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের একটি মামলায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী খান আলতাফ হোসেন ভূলুর নামে অতীত ও বর্তমানের কোনো মামলার কথা হলফনামায় উল্লেখ নেই। তবে ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আন্দোলন এবং এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
এ আসনের ১১ প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির নাসরিন জাহান রত্মা, জাকের পার্টির মো. হুমায়ুন কবির সিকদার, তৃণমুল বিএনপির টি.এম. জহিরুল হক তুহিন, জাসদের মোহম্মদ মোহসীন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. মাইনুল ইসলাম, এনপিপি’র মো. মোশারফ হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজিব আহম্মদ তালুকদার, মো. শাহবাজ মিঞা ও মো. কামরুল ইসলাম খান- এ নয়জনের নামে অতীত ও বর্তমানে কোনো মামলা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২৩
এমএস/আরএইচ