বরিশাল: বরিশাল জেলার ৬টি আসনে ৪৫ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এরমধ্যে বরিশাল-৩ ও ৪ আসনে ১২ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে।
এই দুই আসনে সম্পদশালী প্রার্থী রয়েছেন কয়েকজন। বরিশাল-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া টিপু সম্পদের হিসাবে রয়েছেন শীর্ষে। ঢাকা-৮ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও আগামী নির্বাচনে বরিশাল-৩ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী রাশেদ খান মেনন কিংবা বরিশাল-৪ আসনের বর্তমান এমপি ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ নাথও সম্পদশালী।
রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে দাখিলকৃত হলফনামার তথ্যানুযায়ী, বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপুর ১৫০ ভরি অলংকার ছাড়াও ২৮ কোটি ৪০ লাখ ৩৬ হাজার অস্থাবর সম্পদ এবং তার স্ত্রীর ৪ কোটি ৬৯ লাখ ১৪ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। এছাড়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে কৃষি, অকৃষি জমি, দালান, বাড়ি/এপার্টমেন্টসসহ ৬৭ কোটি ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকার বেশি সম্পদ রয়েছে টিপুর। তার ব্যাংকের কাছে দায় রয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকার।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী সরদার মো. খালেদ হোসেনের ২৩ লাখ ২২ হাজার টাকার ও তার স্ত্রীর ১ লাখ ৫ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। আর স্থাবর সম্পদে ফ্লাট, দ্বিতল বাড়ি, কৃষি-অকৃষি জমিসহ প্রায় সাড়ে ৮৭ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে। সেই সাথে সাড়ে ৬ লাখ টাকার কিছুটা বেশি মূল্যের অকৃষি জমি রয়েছে তার স্ত্রীর।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি রাশেদ খান মেননের ৩৭ লাখ ২০ হাজার টাকা কৃষি জমি ও তার স্ত্রীর প্রায় দেড় কোটি টাকার বাড়ি/এপার্টমেন্ট রয়েছে। বন্ধুর কাছ থেকে ২ কোটি ঋণের দায় রয়েছে মেননের। একই দলের অপর প্রার্থী টিপু সুলতানের ২০ তোলা অলংকার ছাড়া প্রায় ১০ লাখ টাকার এবং তার স্ত্রীর ৩০ ভরি অলংকার ছাড়াও ৩২ লাখ টাকার বেশি অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। এছাড়া স্থাবর সম্পদে স্বামী-স্ত্রীর যৌথ মালিকানায় আবাসিক দালান এবং প্রার্থীর নিজের ২৮ লাখ টাকার অকৃষি জমি রয়েছে।
বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. আজমুল হাসান জিহাদের স্থাবর-অস্থাবর কোনো সম্পদ নেই। তৃণমূল বিএনপির শাহানাজ হোসেনের ৪৭ লাখ টাকার বেশি অস্থাবর সম্পদ ও ২৭ শতাংশ কৃষি-অকৃষি জমি রয়েছে স্থাবর সম্পদ হিসাবে।
জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চুর ব্যক্তিগত গাড়িসহ প্রায় ৯৫ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ, তার স্ত্রীর ৪ লাখ ২০ হাজার টাকার ও ছেলের ৭ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। এছাড়া বসতবাড়ির দালান, মার্কেট ও অকৃষি জমি স্থাবর সম্পদে রয়েছে প্রার্থীর। আর প্রার্থীর স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের নামেও স্থাবর সম্পদে অকৃষি জমি রয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আমিনুল হকের আসবাবপত্র ও অলংকার ছাড়া ৩ কোটি ৮১ লাখ টাকার ওপরে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। এছাড়াও ৩ কোটি টাকার উপরে স্থাবর সম্পদ রয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ৪ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণও রয়েছে প্রার্থীর। অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আতিকুর রহমানের প্রায় ২৬ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ ও তার স্ত্রীর ৩০ ভরি স্বর্ণ ও ৫ লাখ ২৯ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। এছাড়া অকৃষি জমিসহ প্রার্থীর ৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকার বেশি মূল্যের স্থাবর সম্পদ রয়েছে।
বরিশাল-৪ (মেহেন্দিগঞ্জ-হিজলা) আসনে জাতীয় পার্টির মিজানুর রহমানের প্রাইভেট গাড়িসহ ৮৬ লাখ টাকার বেশি অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তবে তার স্থাবর সম্পদ নেই। বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের হৃদয় ইসলাম চুন্নুর নিজের ও নির্ভরশীলদের মিলিয়ে প্রায় ৩ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তবে তারও স্থাবর সম্পদ নেই।
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ নাথের ৬৭ ভরি অলংকার ছাড়া ২ কোটি ৪৯ লাখ টাকার বেশি অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। অপরদিকে ঢাকার পূর্বাচলে ২৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের অকৃষি জমি ও তার স্ত্রীর প্রায় ৪১ লাখ টাকা মূল্যের বাড়ি/এপার্টমেন্ট রয়েছে স্থাবর সম্পদের মধ্যে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৩
এমএস/এমজেএফ