লালমনিরহাট: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের নৌকার প্রার্থী সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের শেয়ার, সঞ্চয় ও ব্যাংকে বিনিয়োগ কমলেও সুদ (আমানত) বেড়েছে কয়েক গুণ।
তিনি প্রতিমন্ত্রী থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় অস্থাবর সম্পদে পোস্টাল, সঞ্চয় পত্রে স্থায়ী ব্যাংক বিনিয়োগ কোটি টাকার উপরে দেখিয়ে সুদ (আমানত) দেখিয়েছিলেন শূন্য।
বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতই এবারেও তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে কোনো সম্পদ নেই উল্লেখ করেছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী।
এবারের হলফনামায় তিনি নিজেকে বি.কম পাস এবং তামাক ব্যবসায়ী, কৃষি ও মৎস্য চাষি উল্লেখ করেছেন। অস্থাবর সম্পদের তালিকায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নগদ ও ব্যাংকে জমার পরিমাণ শূন্য উল্লেখ করলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নগদ অর্থের পরিমাণ দেখিয়েছিলেন এক কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার ২১০ টাকা এবং ব্যাংকে জমা দেখিয়েছিলেন এক কোটি ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৫৮৩.০১ টাকা। তবে দ্বাদশের হলফনামায় নগদ টাকা ৯৫ লাখ ৭৮ হাজার ২৫৪ টাকা দেখালেও ব্যাংকে জমা রয়েছে দুই কোটি ১৪ লাখ ৪ হাজার ৯৯৭ টাকা।
দশম সংসদ নির্বাচনকালে তার নিজ নামে কোনো গাড়ি না থাকলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিমন্ত্রী অবস্থায় ফ্রি করের একটি গাড়ি উল্লেখ করেন। যা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মন্ত্রী হিসেবেও বাড়েনি তার গাড়ির সংখ্যা। দশম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত পরিবর্তন হয়নি ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্রে।
আয়ের উৎস একই থাকলেও দশম সংসদের চেয়ে একাদশের হলফনামায় কয়েকগুণ বাড়লেও দ্বাদশে এসে অনেকাংশেই কমেছে মন্ত্রী ও তার পরিবারের বার্ষিক আয়। স্ত্রী সন্তানদের আয় শূন্য থাকলেও গহনার ক্ষেত্রে দশম সংসদ নির্বাচনে ছিল ৩২ হাজার টাকা একাদশে লিখেছেন ২৫ তোলা এবং দ্বাদশে ৩২ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার উল্লেখ করা হয় হলফনামায়।
একাদশে মন্ত্রী পরিবারের আয়ের বড় অংশ মৎস্য চাষ থেকে বছরে ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৫৬০ টাকা দাবি করা হয়েছিল। দ্বাদশে মৎস্য খামার ও তামাকের ব্যবসার বিবরণ থাকলেও মৎস্য থেকে কোনো আয় টানা দুই বারের মন্ত্রী পরিষদ সদস্য নুরুজ্জামানের। ব্যবসায় আয় দেখানো হয়েছে ছয় লাখ টাকা। কৃষি খাতে একাদশে আয় ছিল এক লাখ ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা দ্বাদশে বেড়ে হয়েছে দুই লাখ ৪৯ হাজার ৬০০ টাকা। বাড়ি ও গোডাউন ভাড়ায় একাদশে ৯২ হাজার ৪০০ টাকা উল্লেখ করা হলেও দ্বাদশে বেড়ে আয় হয়েছে এক লাখ ১৬ হাজার ৯০০ টাকা। মন্ত্রীর নিজ নামে অস্থাবর সম্পদে শেয়ার ও সঞ্চয় পত্রে ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ দেখানো হয় এবং তা থেকে বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ৮ লাখ ৫৪ হাজার ৯০৬ টাকা।
স্থাবর সম্পদের বর্ণনায় কৃষি জমি ও মৎস্য খামার মিলে একাদশে ৬০ বিঘা জমি দেখানো হলেও দ্বাদশে ১০ বিঘা জমি কমেছে মন্ত্রীর। যার মধ্যে মৎস্য খামারে পূর্বের ন্যায় ৩৫ বিঘা এবং কৃষিতে ২৫ বিঘা। দালান বা আবাসিক ভবন না থাকলেও রাজউকে ৩০ লাখ টাকার একটি প্লট রয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর। যা দশম সংসদ নির্বাচনে ছিল না। প্রতিমন্ত্রী হয়ে ক্রয় করেছেন বলে একাদশের হলফনামায় উল্লেখ করেন। তবে দ্বাদশে এসে ফুল মন্ত্রী হয়েও বাড়েনি প্লট বা আবাসিক ভবন।
ফৌজদারি মামলা দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ছিল না, এবারও তার নামে কোনো মামলা নেই। তবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ থাকলেও একাদশ এবং দ্বাদশে কোনো দেনা নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লালমনিরহাট-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। সেই মনোনয়নপত্রের হলফনামায় এসব তথ্য তুলে ধারেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২৩
এসএম