বরিশাল: আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনে নৌকা প্রতীকে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
এ আসনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম তেমন একটা না থাকলেও নৌকার ওপর ভরসা করে বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী মেনন অনুসারীরা।
এদিকে সূত্রও বলছে, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ঘনিষ্টজন খ্যাত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুসের মনোনয়ন প্রাপ্তির প্রত্যাশায় আগে থেকেই বরিশাল-২ আসনের দুটি উপজেলাতেই আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বেশ সু-সংগঠিত। সেই হিসেবে আওয়ামী লীগের সমর্থনের কারণেই মেননই জয় ছিনিয়ে আনবেন।
আর বানারীপাড়া ও উজিরপুরের আওয়ামী লীগ নেতারাও বলছেন, নেত্রীর নির্দেশ শিরোধার্য। এর ব্যত্যয় ঘটানোর সুযোগ নেই। আর জেলা থেকেও পৌর এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নৌকার পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এরইমধ্যে।
যদিও বানারীপাড়া-উজিরপুর উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্যও বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মো. মনিরুল ইসলাম, শেরে বাংলা এ.কে.এম. ফজলুল হকের দৌহিত্র বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এ.কে ফাইয়াজুল হক, জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেনের মতো প্রার্থীসহ আরও ছয়জন প্রার্থী রয়েছেন নির্বাচনের মাঠে। ফলে কাউকে অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই এ আসনে।
তবে নির্বাচনের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থীকে সমান ভেবেই কাজ করার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি বরিশাল জেলা কমিটির নেতারা।
জেলা কমিটির সিনিয়র সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজ্জাম্মেল হক ফিরোজ বলেন, আমরা বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের উপস্থিতিতে বরিশাল-২ আসনের আওয়ামী লীগের বন্ধুদের (নেতাদের) সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদের সমর্থনের বিষয়টি স্পষ্ট এবং আমরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার আশাও করছি।
এদিকে উজিরপুরে সাংগঠনিক অবস্থা ভালো থাকলেও বানারীপাড়ায় নাজুক বললেই চলে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি বরিশাল জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান।
তিনি বলেন, সংগঠনের বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনের বৈতরনী পার করা কঠিন। প্রধানমন্ত্রী সন্তুষ্ট হয়ে আমাদের নেতাকে ওখানে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। আর এরইমধ্যে উজিরপুর ও বানারীপাড়ায় আওয়ামী লীগের বন্ধুরা বর্ধিত সভা করেছে। আর আওয়ামী লীগের বন্ধুরা সাংগঠনিকভাবে ওখানে শক্তিশালী আছে তারাই আমাদের নির্বাচনী বৈতরণী পার করবে বলে আমার বিশ্বাস এবং আমরা বিপুল ভোটে নির্বাচিতও হবো।
জানা গেছে, ঢাকা-৮ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বরিশাল-২ আসন থেকে এর আগে ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হন এবং ১৯৯৬ সালে পরাজিত হন। তখন বানারীপাড়া-উজিরপুর মিলিয়ে বরিশাল-২ আসনের ব্যপ্তি না থাকলেও উজিরপুর-বাবুগঞ্জ মিলিয়ে ছিল একটি আসন, আর বানারীপাড়া ছিল পার্শ্ববর্তী পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠী বর্তমান নেছারাবাদ উপজেলার সঙ্গে আরেকটি আসন। ফলে উজিরপুরের মানুষের সঙ্গে পূর্ব সখ্যতা থাকলেও বানারীপাড়ায় রাশেদ খান মেননকে হাটতে হবে অনেকটাই নতুনের মতো করে।
সেই সঙ্গে রাশেদ খান মেননের বাবা ঢাকা উচ্চ আদালতের সাবেক বিচারপতি আবদুল জব্বার খানের বাড়ি পাশের বাবুগঞ্জের বাহেরচর এলাকায় হওয়ায় বরিশাল-২ এর থেকে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে তার প্রার্থিতা হওয়া উত্তম ছিল বলে দাবি করেছেন অনেকেই।
যদিও সম্প্রতি নিজ দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে একটি সভায় উজিরপুর-বানারীপাড়াবাসীসহ গোটা বরিশালের মানুষ নির্বাচনে সহযোগিতা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রাশেদ খান মেনন।
বাংলাদেশ সময়: ১০১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩
এমএস/এএটি