লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ড. আনোয়ার হোসেন খান স্বতন্ত্র প্রতীকের প্রার্থী হাবিবুর রহমান পবনের ঈগল প্রতীক নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক বক্তব্য দিয়েছেন। ঈগল প্রতীককে তিনি ‘টিয়া পাখি, কোয়েল পাখি, কুরপাল’ বলে ব্যঙ্গ করেন।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন খান নেতাকর্মীদের নিয়ে রামগঞ্জ শহরে একটি মিছিল বের করেন।
পরে শহরের খান টাওয়ারের সামনে এসে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে নির্বাচনী বক্তব্য রাখেন। প্রায় ১১ মিনিটের বক্তব্যের পুরো সময়ে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন। এসময় ঈগল মার্কাকে টিয়া-কোয়েল-কুরপাল বলে ব্যঙ্গ করেন তিনি।
এছাড়া পবনকে চাঁদাবাজ ও মাদকসেবীও বলেন আনোয়ার খান।
এদিকে নির্বাচন আচরণ বিধির ১১ এর (ক) ধারায় বলা আছে- ‘নির্বাচনী প্রচারণাকালে ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করে বক্তব্য বা কোনো ধরনের তিক্ত বা উসকানিমূলক, মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া যাবে না। ’
নৌকার প্রার্থী ড. আনোয়ার হোসেন খান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য। স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান পবন কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য।
বক্তব্যে পবনের ঈগল প্রতীক নিয়ে ব্যঙ্গ করে আনোয়ার খান বলেন, আপনি আসছেন টিয়া পাখি নিয়ে এখানে ইলেকশন করতে। কেউ বলে কুরপাল, কেউ বলে টিয়া পাখি, কেউ বলে আবার ঈগল। আমার আওয়ামী লীগের মধ্যে এগুলো নাই। আওয়ামী লীগে আছে নৌকা। নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক, বাংলাদেশ সৃষ্টির প্রতীক, শেখ হাসিনার প্রতীক, বঙ্গবন্ধুর প্রতীক। আপনি নৌকার কাতারে চলে আসুন। আপনি যদি বিদ্রোহী ভোট করেন, আপনার যুবলীগের কাছে আমরা নালিশ পাঠাব। যুবলীগ আর আওয়ামী লীগ এক নয়। যুবলীগ অঙ্গ সংগঠন। আপনি যাদেরকে নিয়ে আসতেছেন, আমরা জানি। আপনি অস্ত্র আনতেছেন সেটাও আমরা জানি। আমরা সব মোকাবিলা করে ৭ তারিখ নৌকাকে রায় দিয়ে জানাব- এখানে নৌকার ঘাঁটি। আপনি সকালে এক কথা বলেন, বিকেলে আরেক কথা বলেন।
বক্তব্যে আনোয়ার হোসেন খান বলেন, একজন মানুষ আওয়ামী লীগের ছিল, যুবলীগের ছিল। সে কি করে বিদ্রোহী হয়- আমার জানা নেই। নৌকাকে যদি ভালোবাসে, তাহলে নৌকাকে নষ্ট করতে আজকে কেন বিদ্রোহী হলেন? যদি নৌকাকেই ভালোবাসেন, তাহলে আজকেই আপনার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন৷ যদি প্রত্যাহার না করেন, আমরা ধরে নেব আপনি নৌকার শত্রু। আপনি নৌকাকে ভালোবাসেন না। আপনাকে নৌকার বিদ্রোহী হিসেবে আমরা চিহ্নিত করে কথা বলব। আপনি বিদ্রোহী হয়ে নৌকাকে ছিদ্র করতে চান।
আনোয়ার খান বলেন, ‘কোয়েল পাখি’ ওনার মার্কা হতে পারে না। যেখানে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত, সেখানে উনি জেনেশুনে কিছু আওয়ামী লীগের পুরোনো মানুষকে নিয়ে আসছে। যারা এখান থেকে বার বার নির্বাচন করে হেরে গেছে। সেই পুরাতন মানুষ কিছু নিয়ে আসছে। মনে করেছে ওই জোয়ারে অনেক কিছু করবে।
পবনকে চাঁদাবাজ অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, আপনি হকার্স মার্কেটে থাকেন, হকার্স মার্কেট আর রামগঞ্জ এক জিনিস নয়। হকার্স মার্কেটে আপনার সেই চাঁদাবাজি আমরা তুলে ধরতে চাই না৷ আমরা বলতে চাই না, আপনি কীভাবে টাকা উপার্জন করেন। হকার্স মার্কেট থেকে কতটাকা দিয়ে আপনি যুবলীগের পদ পেয়েছেন, সব আমরা জানি। আমরা কিন্তু মুখ খুলতে চাই না। আর বাড়াবাড়ি করলে বলে দেব- আপনি কীভাবে আসছেন। কার চাঁদাবাজির টাকা নিয়ে আপনি এখানে ভোট করতে আসছেন। সকল লিস্ট আমাদের কাছে আছে।
পবনের পক্ষ নির্বাচনী কাজ করায় প্রবীণ একজন আওয়ামী লীগ নেতার সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনি একজন পুরাতন আওয়ামী লীগকে নিয়ে আসছেন। যিনি ২০১৪ সালে নৌকার বিদ্রোহী ছিল। ৪৪ টা স্কুল জ্বালাই দিছেন৷ তাকে নিয়ে আপনি আসছেন। আমরা ভয় পাই না। তিনি নৌকাকে ছিদ্র করেছেন।
পবনকে মাদকসেবী আখ্যা দিয়ে নৌকা প্রার্থী বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে আপনি বিভিন্ন জায়গায় চিঠি দেন। আপনি আমাকে নিয়ে যে সমস্ত চিঠিপত্র লিখেছেন জবাব পাবেন, অপেক্ষা করুন। সময় বলে দেবে। আপনি কি করছেন, কি করেন নাই। আপনার বাড়িতে কি করেন, না করেন। নাচানাচি করেন, ডিব্বা কাদের খাওয়ান? সব ছবি আমাদের কাছে আছে। আপনি মাদক নিয়ন্ত্রণ করবেন, নিজেই তো মাদক খান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩
এসএএইচ