মাদারীপুর: মাদারীপুর-৩ আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের একটি নির্বাচনী ক্যাম্পে কর্মীদের মারধর করে তালা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সোহেল রানা।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপ তার নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে কালকিনি পৌরসভাধীন জুরগাঁও বাজার সংলগ্ন স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে প্রবেশ করেন। সেসময় তার সঙ্গে থাকা ৩০-৩৫ জন কর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী কিরণ সরদার, রুহুল আনি সরদার, জাকির ঘরামী, রুহুল আমিন চোকদারকে মারধর করে বের করে দেন। পরে গোলাপের নির্দেশে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ক্যাম্পের সামনে লাগানো ঈগল প্রতীকের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ করা হয়।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওই ক্যাম্প পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্মী সুবেদার আলী সরদার বলেন, 'নৌকার প্রার্থী গোলাপ নিজে আমাদের ক্যাম্পে দলবল নিয়ে এসে হামলা চালিয়ে তালা মেরে গিয়েছেন। যাওয়ার সময় আমাদের হুমকি দিয়ে বলে গেছেন, ‘ভবিষ্যতে এই ক্যাম্পের ধারে কাছে কেউ যেন না আসে এবং এখানে নৌকার বাইরে কেউ অন্য কারও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। ’ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও তার কর্মীদের এরূপ কর্মকাণ্ডে আমরা আতঙ্কিত।
এ সম্পর্কে স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম বলেন, ‘একজন প্রার্থী কতটা জঘন্য হলে এমন কাজ করতে পারেন, তা বলার ভাষা নেই। গোলাপ সাহেব নিজের হাতে আমাদের একজন কর্মীকে চড় দিয়ে ঘাড় ধরে ক্যাম্প থেকে বের করে দিয়েছেন। অন্য কয়েকজন কর্মীদের দিয়ে মারধর করিয়েছেন। তার মতো মানুষ কি এটা করতে পারেন? আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ’
স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সোহেল রানা বলেন, ‘আমাদের প্রচারণায় বাঁধা সৃষ্টি করে যাচ্ছেন নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপ। তিনি প্রতিনিয়ত আমাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছেন। নির্বাচনী ক্যাম্পে তালা দিয়ে কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। এসব আচারণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়লেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আমরা সুন্দর পরিবেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন চাই। ’
অভিযোগ বিষয়ে নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, ‘এগুলো তাদের কাল্পনিক, বানোয়াট, মিথ্যাচার ও অপপ্রচার। এটা কি আমার দ্বারা সম্ভব! তারা (স্বতন্ত্র প্রার্থী) যে আমার বিরুদ্ধে বানোয়াট তথ্য দিচ্ছেন, তার একটি পার্ট হচ্ছে -এ ঘটনা সাজিয়ে অভিযোগ দেওয়া। ’
সহকারী রিটার্নিং ও কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অভিযোগ পেয়ে ওই ক্যাম্পে এসিল্যান্ডকে পাঠানো হয়েছে। এখানে আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে অবশ্যই বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। '
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩
এসআরএস