রাজশাহী: আচরণবিধি লঙ্ঘন ও স্বতন্ত্র প্রার্থীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের নামে দুটি মামলা রেকর্ড করেছে পুলিশ। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ বাদী হয়ে এ মামলা দুটি করেছেন।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজশাহীর বাগমারা থানায় মামলা দুটির রেকর্ড করা হয়।
এর আগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপ-সচিব (আইন) আব্দুছ সালাম উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে এ মামলা করতে নির্দেশ দিয়ে চিঠি দেন।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) স্বাক্ষরিত এ দুটি চিঠির একটি মধ্যরাতে এবং অপরটি শনিবার দুপুরে হাতে পান নির্বাচন কর্মকর্তা। চিঠির ভিত্তিতে নির্বাচন কর্মকর্তা শনিবার বাগমারা থানায় মামলা দুটি করেন।
শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল মজিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মামলা দুটি বাগমারা থানায় রেকর্ড হয়ে গেছে। আর নির্বাচন কর্মকর্তাকে মামলা করার নির্দেশ দিয়ে যেই চিঠি দেওয়া হয়েছিল তার প্রথমটিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ গত ২৬ ডিসেম্বর স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হককে উদ্দেশ্য করে প্রাণনাশের হুমকি, অশ্লীল ভাষায় বক্তব্য এবং নৌকার বাইরে কোনো মাস্তানি চলবে না বলে বিভিন্ন প্রকার আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেন। এ কারণে নির্বাচন কমিশন তার বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আর দ্বিতীয় চিঠিতে বলা হয়, গত ১০ ডিসেম্বর নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হকের কর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ ব্যাপারে এ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। তাই নির্বাচন কমিশন আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
দুটি চিঠিরই অনুলিপি রাজশাহীর রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট থানায় এজাহার গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে এজাহারের অনুলিপিসহ তা ইসিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবহিত করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠির অনুলিপি রাজশাহীর পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছেও পাঠানো হয়েছে।
রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুর রহমান বলেন, প্রথম মামলাটা রেকর্ড করার বিষয়টি ইসিকে অবহিত করা হয়েছে। মামলার এজাহারের অনুলিপিও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় মামলাটির অনুলিপিও দেওয়া হবে।
রাজশাহী-৪ আসনের নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র এবং পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
দলীয় মনোনয়ন পেয়ে তিনি প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করছেন।
এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক (কাঁচি প্রতীক) উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। পরপর তিনটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলেও এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
আবুল কালাম আজাদ মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই সভা-সমাবেশে নানা উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে আসছেন। এরই মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচার মিছিলে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে কালামের বিরুদ্ধে অন্তত ১৮টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তাকে বেশ কয়েকবার কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয় এ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। তারপরেও তিনি সংযত হননি।
শেষে গত সোমবার (১ জানুয়ারি) নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসিতে সুপারিশ পাঠায়। #
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২৪
এসএস/জেএইচ