কক্সবাজার: রাত পোহালেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। নিয়ম অনুযায়ী শনিবার সকাল আটটায় শেষ হয়েছে নির্বাচনী প্রচারণা।
কারণ হিসেবে তারা বলছেন, গেল পাঁচ বছর সংসদ সদস্য হিসেবে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন এবং এই উন্নয়নের ফলে মানুষের মধ্যে প্রচুর সাড়া পাওয়া গেছে। এছাড়া তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ‘বহিরাগত’ হওয়ায় অনেকটা স্বস্তি বিরাজ করছে জাফর শিবিরে।
গত কয়েকদিন টানা নির্বাচনী প্রচরণায় মানুষের দ্বারে দ্বারে গেছেন এমপি জাফর। করেছেন অসংখ্য পথসভা ও উঠান বৈঠক। আপামর জনসাধারণের মাঝে তার এই উপস্থিতি আলাদা করেছে অন্য প্রার্থী থেকে।
কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা নিয়ে কক্সবাজারে-১ আসনটি গঠিত। এই আসনের এমপি হিসেবে গত পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন জাফর আলম। এসময়ের মধ্যে এমপি জাফর ছুটে বেড়িয়েছেন গ্রাম থেকে গ্রামে। সারাদেশের মতো উন্নয়নের ছোঁয়া দিয়েছেন চকরিয়া ও পেকুয়াতে।
তবে এবার তার দল আওয়ামী লীগ তাকে মনোনয়ন দেয়নি। মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও এলাকার মানুষের ব্যাপক সমর্থনের কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পেছনে জাফর আলম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন করতে ইচ্ছুক সবাইকে নির্বাচন করতে বলেছেন। মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে কোনো বাধা নেই। এমনকি কর্মীদের কাজ করতেও কোনো বাধা নেই। তাছাড়া আমার আসনে নৌকার কোনো প্রার্থী নেই। তাই আমি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত হয়ে আমার আসনটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে চাই।
নেত্রীকে আসনটি উপহার দেওয়ার কাজটি সহজ করে দেবে জনগণই-এমনটাই মনে করেন তিনি। বলেন, আমি যেমন আমার নেত্রীকে ভালোবাসি, তেমনি এই এলাকার প্রতিটি মানুষই ভালেবাসেন। তাই তারা ভুল করবেন না বলেই বিশ্বাস।
এসবের পাশাপাশি তিনি ভোট সুষ্ঠু করার দাবি জানান নির্বাচন কমিশনের কাছে। তার দাবি, ভোটারদের উপস্থিতি ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হবেন তিনি।
চকরিয়া-পেকুয়া আসনে সাতজন প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের মধ্যে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, জাফরের বাড়ি চকরিয়ার পালাকাটায়। তিনি চকরিয়া পৌরসভার মেয়র, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য ছিলেন। অন্যদিকে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে। চকরিয়া ও পেকুয়ার মানুষের কাছে ‘অচেনা’ ইবরাহিম আওয়ামী লীগের সমর্থনে অনেকটা পথ হেঁটেছেন। তবে ভোটারদের মাঝে এ মুহূর্তে আঞ্চলিকতা কাজ করছে। এমনটি যদি হয় জাফরের বিজয় অনেকটা নিশ্চিত বলছেন ভোটাররা।
এই দুই প্রার্থীর বাইরে লাঙ্গল প্রতীকে হোসনে আরা, কলার ছড়ি প্রতিকে মিরাক্কেল তারকা কমরউদ্দিন আরমান, এমপি জাফরের ছেলে ঈগল প্রতীকের তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী তুহিন, ওয়ার্কার্স পার্টির হাতুড়ী প্রতীকের আবু মোহাম্মদ বশিরুল আলম, ইসলামী ফ্রন্টের মোমবাতি প্রতীকের মুহাম্মদ বেলাল উদ্দিন। স্থানীয় নানা ইস্যু কাজে লাগিয়ে ভোটে জেতার জন্য মরিয়া তারা। তবে ডিজিটাল মার্কেটিং করে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে আছেন কমরউদ্দিন আরমান।
এমপি জাফর বলেন, স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর এই আসনে আওয়ামী লীগের এমপি হিসেবে প্রথমবার নির্বাচিত হয়েছিলাম। জনগণের খুব কাছাকাছি ছিলাম। এজন্য জনগণ এবারের নির্বাচনেও আমাকে ভোট দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন। তাই জনগণের সেই ভালবাসা থেকে আমি কোনদিন দূরে থাকতে চাই না। বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমি জনগণের সেবা করতে চাই।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক