ঢাকা: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা নির্বাচনে বিতর্কিতদের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে দাবি জানিয়েছেন এক প্রার্থী।
বৃহস্পতিবার (০২ মে) মো. আব্দুল জলিল নামে ওই প্রার্থী সিইসির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
তিনি আবেদনে বলেন, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নিয়ে অন্য প্রার্থী গোপন বৈঠক করেছেন। তাই বিতর্কিত ব্যক্তিদের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে যেন নিয়োগ না দেওয়া হয়।
ওই প্রার্থী বলেন, আমি আলহাজ মো. আ. জলিল, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। আমি অভিযোগ করছি যে, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জামিল হাসান দুর্জয় গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলীর বড় ভাই। তিনি নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার ও নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে পারে এমন ব্যক্তিদের নিয়ে কয়েক ধাপে গোপন বৈঠক করেন। তার ধারাবাহিকতায় গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকার সাবাহ গার্ডেন নামে একটি বিনোদন কেন্দ্রে শিক্ষকদের নিয়ে গোপন বৈঠকের আয়োজন করেন। ওই বৈঠকে উপস্থিত শিক্ষকদের আর্থিক সুবিধাসহ চাকুরিকালীন বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলে নির্বাচনে সহযোগিতা চান।
বিষয়টি প্রশাসনের কর্মকর্তারা টের পেয়ে ওই বিনোদন কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে সত্যতা পান এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন, যা দেশের জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ পেয়েছে।
এদিকে, প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জামিল হাসান দুর্জয়ের বাবার নামে শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি কলেজ (সাবেক শ্রীপুর ডিগ্রি কলেজ)। প্রার্থী ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি ওই কলেজসহ উপজেলার মিজানুর রহমান খান ডিগ্রি মহিলা কলেজে সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘ সময়। তিনি সভাপতি থাকাকালীন সময়ে দুটি কলেজে বেশির ভাগ শিক্ষক নিয়োগ তার হাতেই।
অপরদিকে, আব্দুল আউয়াল কলেজের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ছোট বোন। এছাড়াও ওই কলেজের বর্তমান সভাপতির বাবা তেলিহাটি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন সরকার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচন সমন্বয়ক।
এদিকে, উপজেলার ধলাদিয়া ডিগ্রি কলেজের বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ছোট বোনের স্বামী। শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। ওই সব প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, অধ্যাপক ও প্রভাষকসহ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে পারেন এমন কর্মকর্তাদের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া থেকে বিরত রাখতে অনুরোধ করছি।
আবেদনে ওই প্রার্থী আরও বলেন, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থীর গোপন বৈঠকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও গাজীপুর-৩ আসনে (শ্রীপুর উপজেলা, গাজীপুর সদরের ভাওয়াল গড়, পিরুজালী ও মির্জাপুর ইউনিয়ন) সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে অনুরোধ করছি।
নির্বাচন কমিশন এবার চার ধাপে উপজেলা নির্বাচন করছে। প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৮ মে। দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ভোট হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৬ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩০৬ ঘণ্টা, মে ০২, ২০২৪
ইইউডি/এমজেএফ