ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

দৌলতপুরে প্রার্থীর হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়ার অভিযোগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৪
দৌলতপুরে প্রার্থীর হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়ার অভিযোগ

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী বুলবুল চৌধুরী নির্বাচন কমিশনে তার হলফনামায় অসত্য তথ্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আনিসুর রহমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর এক আবেদনে এ অভিযোগ করেন।

তিনি দাবি করেন, বুলবুল চৌধুরী জন্মতারিখ নিয়ে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। তার হলফনামার কাগজে দুই জন্মতারিখ উল্লেখের প্রসঙ্গ টেনে তিনি এর প্রতিকার চেয়েছেন।

প্রার্থী বুলবুল চৌধুরীর হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে তার জন্মতারিখ ১৯৮১ সালের ৩১ ডিসেম্বর। জমা দেওয়া নথিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ১৯৯৫ সালে সামাজিক বিজ্ঞানে তৃতীয় বিভাগে ডিগ্রি পাস করেছেন। দুই কাগজের হিসাবে, বুলবুল চৌধুরী ‍মাত্র ১৪ বছর বয়সে ডিগ্রি পাস করেছেন। সাধারণত ১৫-১৬ বছর বয়সে এসএসসি পাস করা যায়।

বুলবুল চৌধুরীর এসএসসির সনদ ও এ পরীক্ষার নিবন্ধনে দেখা যায়, তার প্রকৃত জন্ম তারিখ ১৯৭৫ সালের ৬ মার্চ। এসএসসি পরীক্ষার নিবন্ধনে উল্লিখিত জন্মতারিখ ও জাতীয় পরিচয়পত্রে উল্লেখ করা জন্মতারিখের মধ্যে পাঁচ বছর আট মাস পার্থক্য রয়েছে।

প্রার্থীর হলফনামায় এমন অসঙ্গতির বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবু আনছার মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণত মনোনয়নপত্র দাখিলের বিরুদ্ধে দাবি-আপত্তি আছে কি না বা কোনো অভিযোগ আছে কি না তা দেখা হয়। আমার জানা মতে, ওই সময় কোনো অভিযোগ তোলা হয়নি। আপিলের সময়ের মধ্যেও কেউ অভিযোগ করেনি। আর বয়সের ব্যাপারে ভোটার তালিকার কোনো তথ্যের ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ নেই। তবে হলফনামার ব্যাপারে সত্য-অসত্যের একটি ব্যাপার আছে, আপনি যেটা বলছেন- এসব বিষয় নিয়ে যখন প্রশ্ন করার কথা তখন কেউ প্রশ্ন করেনি।

মুহাম্মদ আবু আনছার বলেন, যাচাই-বাছাইকালে বিষয়টি চোখে না পড়ার একটি কারণ হতে পারে, প্রার্থীর বয়স ২৫ বছর নির্ধারিত থাকা। বাছাইয়ের সময় সাধারণত নজরে থাকে ২৫ বছরের নিচে হচ্ছে কি না সেটা। বয়সের ক্ষেত্রে প্রার্থীর উচিত ছিল এসএসসির সনদ দেখে এনআইডি করা। তাহলে এটাই সঠিক হতো।

এ বিষয় কথা হয় জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদের সঙ্গেও। তিনি মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের যে বিধিমালা আছে, সে মোতাবেক হলফনামায় এসএসসি পাসের সনদ বা নিবন্ধনের কোনো কপি দেওয়া হয় না বা বিধিমালায় নেই বলে চাওয়াও হয় ন।

একজন প্রার্থী ১৫ বছরেরও কম সময়ে ডিগ্রি পাস করেছেন, হলফনামায় উল্লেখ ও সংযুক্ত করা সেই ডিগ্রি পাসের সনদ দেখে প্রশ্ন তোলা যেত কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষাগত সনদের শেষ সনদের কথা বলা হয়েছে। হলফনামায় সেটাই সংযুক্ত করা হয়েছে। সার্টিফিকেটে উল্লেখ করা বয়স ও এনআইডিতে উল্লেখ করা বয়সে যদি ভিন্ন হয় এবং কেউ অভিযোগ করে, আমরা সেটা তদন্ত করে দেখবো। তারপর বলা যাবে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে এবং নির্বাচনের আগেই তা দেখবো।  

অভিযোগের বিষয়ে প্রার্থী বুলবুল চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ২১ এপ্রিল। তা যাচাই-বাছাই হয় ২৩ এপ্রিল। ২৬ এপ্রিল ছিল আপিলের তারিখ। প্রত্যাহারের তারিখ ছিল ৩০ এপ্রিল। আর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয় ২ মে। আগামী ২১ মে এ উপজেলায় অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৪
জেডএ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।