ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

খুলনার তিন উপজেলায় ৯৫ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ, সহিংসতার আশঙ্কা

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১০ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২৪
খুলনার তিন উপজেলায় ৯৫ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ, সহিংসতার আশঙ্কা

খুলনা: ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে খুলনার তিনটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ মঙ্গলবার (২১ মে)। উপজেলাগুলো হলো তেরখাদা, দিঘলিয়া ও ফুলতলা।

রোববার (১৯ মে) মধ্যরাতেই শেষ হচ্ছে এ ভোটের প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনে পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে ইতোমধ্যে মাঠে নামছে বিজিবি ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী।

নির্বাচনকে সামনে রেখে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে উপজেলাগুলো। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, ভোটের শেষ প্রান্তে এসে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এবং কর্মী-সমর্থকদের উসকানিমূলক কথাবার্তা ভোটের মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এ কারণে ভোটের দিন সহিংসতার আশঙ্কা করছেন অনেকে।

ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোটকেন্দ্র দখল ও আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা এবং দলীয় রেষারেষির কারণে ভোটের দিন বিশেষ করে তেরখাদা ও দিঘলিয়ায় প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তেরখাদা উপজেলায় মোট ভোটার এক লাখ তিন হাজার ৭৬৮ জন, দিঘলিয়া উপজেলায় এক লাখ ৩০ হাজার ৭৪৮ জন এবং ফুলতলা উপজেলায় মোট ভোটার এক লাখ ১৫ হাজার ১৮৭ জন।

দ্বিতীয় ধাপের এই নির্বাচনে খুলনার তিন উপজেলার ১৩৮টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৯৫টিকে গুরুত্বপূর্ণ ও ৪৩টিকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। মোট ১৩৮টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে তেরখাদা উপজেলায় ভোট কেন্দ্র ৪৩টি, দিঘলিয়ায় ৫২টি ও ফুলতলায় ৪৩টি।

জানা যায়, তেরখাদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে দুইজন চেয়ারম্যান, চারজন ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী চারজন। চেয়ারম্যান পদে লড়বেন আবুল হাসান মুছাল্লী (আনারস) ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সরফুদ্দিন বিশ্বাস (দোয়াত-কলম)।

দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ১৫ জন প্রার্থী লড়ছেন। তাদের মধ্যে চারজন চেয়ারম্যান, আটজন ভাইস চেয়ারম্যান এবং তিনজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মারুফুল ইসলাম (আনারস), তিনবার নির্বাচিত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, সাবেক সেনহাটি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মল্লিক মহিউদ্দিন (দোয়াত কলম), জেলা বিএনপির সাবেক সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও স্টার জুট মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি গাজী এনামুল হাছান মাসুম (হেলিকপ্টার) এবং মো. জাকির হোসেন (মোটরসাইকেল)।

ফুলতলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট আটজন প্রার্থী লড়ছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদের লড়ছেন তিনজন। তারা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চারবারের নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আকরাম হোসেন (আনারস), জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বিলকিছ আক্তার ধারা (মোটর সাইকেল), জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাব্বির (ঘোড়া)।

খুলনার অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ টি এম শামীম মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, ভোট গ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ২০ মে সকালে কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছাবে এবং ব্যালট পেপার যাবে ভোটের দিন সকালে।

খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, একটি নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সব কেন্দ্রই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তার মধ্যেও বিভিন্ন কারণে আমাদের কাছে যেসব কেন্দ্র অনেক গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) মনে হয়েছে সেখানে অনেক বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কয়েক পর্যায়ে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আশা করছি, ভোটাররা স্বাভাবিকভাবেই ভোট কেন্দ্রে আসবেন। পছন্দের ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরবেন। তাদের যাতায়াতে যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়, সেই জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২৪
এমআরএম/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।