রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বসে এসব প্রস্তাব করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাখ) এবং বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি)।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনে ব্যর্থ হলে নির্বাচন কমিশনকে আইনের আওতায় আনার আইন প্রণয়নের দাবিসহ ১৫ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।
বিকেলে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মো. মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানির নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেন।
সংলাপ শেষে সৈয়দ মো. মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দলের পক্ষ থেকে ১৫ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেছি। ০৫ জানুয়ারির মতো আর কোনো নির্বাচন আমরা দেখতে চাই না। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করেছি’।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- সংসদ ভেঙে দিয়ে অন্তবর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করা, অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল, ভোটের একদিন আগে সেনা মোতায়েন, ইভিএমের ব্যবহার না করা, নির্বাচনী জামানত ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন পদ্ধতি প্রণয়ন, নির্বাচনী ব্যয় কমানো, সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি ইত্যাদি’।
এদিকে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট সংলাপে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক দলের সর্বস্তরের কমিটিতে বাধ্যতামূলক ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখার বিধান বাতিল করে নারীদের স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টির জন্য সুপারিশ করে।
দলটির চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মান্নানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয় বেলা ১১টায়।
সংলাপ শেষে দলটির মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিন সাংবাদিকদের জানান, একাদশ সংসদ সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের পক্ষ থেকে ১০ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।
সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন, ইসি’র অধীনে স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে রাখা, নির্বাচনী বিতর্ক, দলের কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার বাধ্যবাধকতা বাতিল ইত্যাদি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নারীদেরকে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের নির্বাহী কমিটিতে সীমিত কোটায় না রেখে প্রত্যেক দলের অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন করে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হোক। তাই ৩৩ শতাংশ বাধ্যতামূলকের বিধান বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে ইসি’র সভাকক্ষে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি’র সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।
গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এবং ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিল ইসি। এরপর গত ২৪ আগস্ট থেকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে। ইতোমধ্যে ছয়টি দলের সঙ্গে সংলাপ শেষ হয়েছে।
এ পর্যন্ত সংলাপে কয়েক ডজন সুপারিশ এসেছে। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- সেনা মোতায়েন, না ভোটের প্রবর্তন, প্রবাসে ভোটাধিকার প্রয়োগ, জাতীয় পরিষদ গঠন, নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন, নির্বাচনের সময় সংসদ ভেঙে দেওয়া, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার ও নির্বাচনকালীন সময়ে ইসি’র অধীনে জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি।
আগামী মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (রিকশা) ও বিকেল ৩টায় ইসলামী ঐক্যজোটের (মিনার) সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৭
ইইউডি/এএসআর