বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এসব সুপারিশ করে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে সংলাপে অংশ নেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীকের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
সংলাপ থেকে বেরিয়ে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যেকোনো কারণে হোক দলীয়করণ হয়ে গেছে। তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কমপক্ষে ৮ দিন আগে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে সহায়ক বা নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা মোট ৮টি সুপারিশ করেছি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ইসির সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভোটাধিকার দেওয়া, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়া, সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনী আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা ও কোনো জোটের প্রার্থীরা ওই জোটের শরীক দলের যে কোনো প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়া।
এদিকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহর নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি সংলাপে নেয়।
সংলাপ শেষে আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ সাংবাদিকদের বলেন, তফসিল ঘোষণার পর সংসদ ভেঙে দিয়ে তিন ধাপে জাতীয় নির্বাচন করার জন্য আমরা সুপারিশ করেছি। এক্ষেত্রে প্রতি ধাপে ১০০ আসন করে ভোটগ্রহণ করা যায়। এতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী ও ভোটারাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে।
তিনি বলেন, সংলাপে আমরা ১২ দফা সুপারিশ তুলে ধরেছি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- না ভোটের বিধান, ইলেক্ট্রনিক ভোটিং ব্যবস্থা চালু করা, নির্বাচনী ব্যায় সংকোচন, কালো টাকার ব্যবহার রোধ ও সকল প্রকার নির্বাচনী ব্যয় নির্বাচন কমিশনের বহন এবং কমিশনের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে এমন মন্ত্রণালয়গুলো যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে কমিশনের সঙ্গে পরামর্শের ব্যবস্থাকরণ।
এ পর্যন্ত ইসিতে নিবন্ধিত ৪০ ট দলের মধ্যে দশটি দলের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি ও ইসলামী ঐক্যজোট সংলাপে নির্ধারিত সময়ে অংশ না নিয়ে পরবর্তীতে সময় দিতে ইসির কাছে আবেদন করেছে।
গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এবং ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিলো ইসি। এরপর গত ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন।
সংলাপে এ পর্যন্ত কয়েক ডজন সুপারিশ এসেছে। সেনা মোতায়েন, না ভোটের প্রবর্তন, প্রবাসে ভোটারধিকার প্রয়োগ, জাতীয় পরিষদ গঠন, নির্বাচনকালীন অস্থায়ী সরকার গঠন, নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার, নির্বাচনের সময় সংসদ ভেঙে দেওয়া, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার ও নির্বাচনকালীন সময়ে ইসির অধীনে জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, দলের নির্বাহী কমিটিতে বাধ্যতামূলকভাবে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখার বিধান তুলে নেওয়া ইত্যাদি সুপারিশগুলোর মধ্যে অন্যতম।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭
ইইউডি/বিএস