ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ইভিএম বাদ, সংসদ ভেঙ্গে দেওয়ার সুপারিশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭
ইভিএম বাদ, সংসদ ভেঙ্গে দেওয়ার সুপারিশ

ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার না করা এবং সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে ভোটগ্রহণের সুপারিশ এসেছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)।

সংস্থাটির সঙ্গে সংলাপে বসে সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ) ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি (পিডিপি) এসব সুপরিশ করেছে।
 
ইসির সভাকক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে সংলাপে বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানির নেতৃত্বে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।


 
দলটির সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে-নির্বাচকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা, তফসিল ঘোষণার পূর্বেই জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করা, তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোট শেষে ১৫ দিন সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতাসহ মাঠে নামানো, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, নির্বাচনে অবৈধ অর্থ, কালো টাকা ও পেশী শক্তির ব্যবহার বন্ধ, নিরপেক্ষ স্থানে ভোটকেন্দ্র্র স্থাপন করা, ভোটার ও প্রার্থীর এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, প্রার্থীদের এজেন্টদের স্বাক্ষরসহ ভোট কেন্দ্রে ভোটের ফলাফল ঘোষণা, অন্তত এক বছর পূর্বে থেকেই সকল দলের সমান সুযোগ সৃষ্টি, না ভোটের বিধান, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যবস্থা, ইভিএম বাদ, সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের সুবিধা ও নিরাপত্তা বাতিল এবং প্রার্থীদের সে নিরাপত্তা প্রদান।
 
এছাড়া বিতর্কিত প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্বাচনী দায়িত্ব না দেওয়া, গণমাধ্যম কর্মীদের সকল কেন্দ্রে উম্মুক্ত প্রবেশাধিকার, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল ও জোটসমূহের সারাদেশে প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে আনুপাতিক হারে প্রতিনিধি নির্বাচনের বিধান চালু করা, ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে নির্বাচনী এলাকা পুন:নির্ধারণ, আসন সংখ্যা বৃদ্ধি ও জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সংসদীয় আসন নির্ধারণ করা এবং রাজধানী ও শহরকেন্দ্রিক আসন সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া, নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার বন্ধ, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নির্বিঘ্নে পর্যবেক্ষণ নিশ্চিতকরণ, অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেবার বিধান এবং প্রার্থী ও দলসমূহের নির্বাচনী আচরণবিধি ঢেলে সাজানোর সুপারিশও করেছে তারা।
 
এদিকে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) কো-চেয়ারম্যান নিলুফার পান্না কোরেশীর নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়।
 
পিডিপি’র সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে-জোট নয় নিজের প্রতীকে ভোটে অংশগ্রহণ, একই দলের বার বার একই প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ বাতিল, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন, ইসির দ্বারা সকল প্রার্থীর নাম, প্রতীক সম্বলিত পোস্টার ছাপানো, ভোটে ইভিএম ব্যবহার না করা, সকল দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা, অর্থ ও পেশি শক্তির ব্যবহার কঠোরভাবে দমন করা।
 
এছাড়া ‘না’ ভোটের বিধান চালু, সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন পরিচালনা, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন, সমান সংখ্যক ভোটার নিয়ে ভোট কেন্দ্র স্থাপন ও ভোট কেন্দ্র বৃদ্ধি, সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে কেন্দ্রে নিয়োজিত করা, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে জনসংখ্যার পাশাপাশি ভোটার সংখ্যা ও আয়তন বিবেচনায় নেয়া, সংসদীয় আসন সংখ্যা বৃদ্ধি, প্রবাসীদের ভোট দানের সুযোগ সৃষ্টি ও জনবিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন না দেওয়ার সুপারিশও করেছে পিডিপি।
 
এ নিয়ে ১৪টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ সম্পন্ন করলো নির্বাচন কমিশন। এরপর ২০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় গণফ্রন্ট (মাছ), বিকেল ৩ টায় গণফোরামের (উদীয়মান সূর্য) সঙ্গে সংলাপে বসবে সংস্থাটি।
 
গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এবং ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিল ইসি। এরপর গত ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন।
 
সেনা মোতায়েন, না ভোটের প্রবর্তন, প্রবাসে ভোটারধিকার প্রয়োগ, জাতীয় পরিষদ গঠন, নির্বাচনকালীন অস্থায়ী সরকার গঠন, নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার, নির্বাচনের সময় সংসদ ভেঙ্গে দেওয়া, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার ও নির্বাচনকালীন সময়ে ইসির অধীনে জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, দলের নির্বাহী কমিটিতে বাধ্যতামূলকভাবে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখার বিধান তুলে নেওয়া ইত্যাদি সুপারিশগুলোর মধ্যে অন্যতম।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭
ইইউডি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।