সূত্র জানিয়েছে, ফ্রান্সের অবার্থার টেকনোলজিসের সঙ্গে ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ১৮ মাসের মধ্যে স্মার্টকার্ড প্রস্তুত করে দিতে চুক্তি করেছিল নির্বাচন কমিশন। চুক্তি অনুসারে, ওই সময়ের মধ্যে ৯ কোটি ভোটারের কার্ড তৈরি এবং তাতে নাগরিকদের তথ্য ইনপুট দেওয়ার কথা ছিল।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে স্মার্টকার্ডের জন্য নেওয়া ‘আইডেনটিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ)’ প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর। আর এ সময়ের মধ্যে কাজ শেষ অর্থাৎ উৎপাদন ও বিতরণ করতে না পারলে টাকা ফেরত যাবে। এজন্য গত মাসে নিজেরাই কার্ড বিতরণের লক্ষ্যে উৎপাদনে যায়। কিন্তু প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে। তাই এবার সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা চেয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের সহকারী প্রধান মো. সাইফুল হক চৌধুরী এ সংক্রান্ত চিঠি ইতিমধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারকে পাঠিয়েছেন। যার অনুলিপি সেনাবাহিনীর প্রধানের সচিবালয়, সামরিক সচিবের দফতরেও পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ইতিমধ্যে ১২ দশমিক ৪১ মিলিয়ন অর্থাৎ ১ কোটি ২৪ লাখ ১০ হাজার কার্ড উৎপাদন (ব্ল্যাঙ্ক কার্ডে নাগরিক তথ্য ইনপুট সম্পন্নকরণ) হয়েছে। এর মধ্যে ১০ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন অর্থাৎ ১ কোটি ৯ লাখ ৮০ হাজার কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অবশিষ্ট ৭৭ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন অর্থাৎ ৭ কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার কার্ড উৎপাদন সম্পন্ন করে দেশব্যাপী বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে’।
এই অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ কার্ড সুষ্ঠুভাবে উৎপাদন ও সুশৃঙ্খলভাবে বিতরণ নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তাকে আইডিইএ প্রকল্পে সংযুক্ত করতে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাও সম্মতি দিয়েছেন।
৭ কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার কার্ড উৎপাদন এবং চোখের কণীনিকা ও ১০ আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহপূর্বক কার্ড পৌঁছাতে সশস্ত্র বাহিনী থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা অথবা জেসিও/ওআরকে আইডিইএ প্রকল্পে জরুরি ভিত্তিতে সংযুক্ত করার অনুরোধও জানানো হয়েছে চিঠিতে। এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫০ জন কর্মকর্তা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন।
২০০৮ সালের আগে তৎকালীন সিইসি এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন সেনাবাহিনীর সহায়তায় ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেছিল। এরপর তারা ২০১১ সালে এসে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় আইডিইএ প্রকল্পটি হাতে নেয়।
কিন্তু নানা বাধায় প্রকল্পটির কাজ শুরুই হয় চার বছর পরে। যে কারণে তিনবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে হয়েছে। এবার আর মেয়াদ না বাড়ানোয় আগামী ডিসেম্বরেই শেষ হচ্ছে প্রকল্পটি।
বর্তমানে দেশে ভোটার রয়েছেন ১০ কোটি ১৭ লাখের বেশি। চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে আরো যুক্ত হচ্ছেন ৩৫ লাখ ভোটার। যেহেতু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভোটার সংখ্যা বাড়বে, তাই স্মার্টকার্ড প্রদানের প্রক্রিয়াটিও চলমান রাখতে হবে। আর এজন্য সরকারের তহবিল থেকেই আরেকটি প্রকল্প হাতে নিতে সরকারের কাছে প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন। ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ওই প্রকল্পটি ইতোমধ্যে পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) কাছে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৭
ইইউডি/এএসআর
** ইসিতে চরম অসন্তোষ
** স্মার্টকার্ড প্রকল্পের অর্থ ফেরত যাওয়ার শঙ্কা
**ফরাসি প্রতিষ্ঠান বাদ, স্মার্টকার্ড তৈরি করছে ইসি