সংস্থাটির সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে সোমবার (০৯ অক্টোবর) জাতীয় পার্টি-জাপা এমন সুপারিশ করেছে।
ইসির সভাকক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে বেলা ১১টায় শুরু হওয়া সংলাপে জাপার চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে দলটির ২৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
সংলাপের শুরুতে সিইসি সকলের সঙ্গে করমর্দন করে পরিচিত হন। এরপর তিনি এরশাদের আমলে প্রশাসনিক উন্নয়নসহ নানা অবদানের কথা তুলে ধরেন।
পরিচিতি পর্বের পর দলটির পক্ষ থেকে একটি লিখিত প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় সিইসির কাছে। এতে ৮ দফা সুপারিশ করে জাপা।
লিখিত সুপারিশের শুরুতেই জাপা বলেছে, অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জাতীয় পার্টির প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করেছে। তাই দলটি মনে করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ সাধনের মাধ্যমে কলঙ্কমুক্ত হয়েছে।
জাপার আটটি সুপারিশগুলো হলো- নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় সারাদেশে স্বশস্ত্র বাহিনী মোতায়ন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করা, নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণার পর নির্দিষ্ট সময়ে সংসদ ভেঙে দিয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকল দলের আনুপাতিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠর করতে হবে এবং দলীয় প্রধানের সুপারিশের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য নিয়োগ করতে হবে, নির্বাচনের সিডিউল ঘোণার পর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসনে কোনো বিতর্কিত কর্মকর্তাকে দায়িত্ব রাখা যাবে না।
নির্বাচনী ব্যায় সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা নির্ধারণ করে সব খরচ তার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার ক্ষেত্রে কঠোরতা আরোপ, প্রচার কাজের গাড়িবহর সীমিত রাখার বিধান।
অন্যদিকে সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ না করে ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করার কথা করেছে জাপা। এছাড়া নির্বাচনকালীন সময়ে প্রয়োজনে সংবিধানের ধারা-উপধারা সংশোধন করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তা নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিয়ে আসার সুপারিশও করেছে দলটি।
জাপা বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে প্রার্থীকে নয় বরং দলকে ভোট দেওয়ার বিধান করার সুপারিশ করেছে। এক্ষেত্রে যেসব দেশে এই পদ্ধতি প্রচলন রয়েছে-সেসব দেশকে অনুসরণ করে পদ্ধতিটি বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে জাতীয় পার্টি।
গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এবং ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিলো ইসি। এরপর গত ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন।
সংলাপে আসা সুপারিশগুলোর মধ্যে সেনা মোতায়েন, না ভোটের প্রবর্তন, প্রবাসে ভোটারধিকার প্রয়োগ, জাতীয় পরিষদ গঠন, নির্বাচনকালীন অস্থায়ী সরকার গঠন, নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার, নির্বাচনের সময় সংসদ ভেঙে দেওয়া, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার ও নির্বাচনকালীন সময়ে ইসির অধীনে জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, দলের নির্বাহী কমিটিতে বাধ্যতামূলকভাবে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখান বিধান তুলে নেওয়া ইত্যাদি অন্যতম।
আগামী ১৫ অক্টোবর বিএনপি (ধানের শীষ) এবং ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের (নৌকা) সঙ্গে বসবে নির্বাচন আয়োজনকারী এই সংস্থাটি।
এবারের সংলাপ শেষ হচ্ছে আগামী ২৪ অক্টোবর। এক্ষেত্রে ২২ অক্টোবর নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে, ২৩ অক্টোবর নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে বসছে নির্বাচন কমিশন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৭
ইইউডি/বিএস