ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

বয়সসীমা পেরিয়ে ইসিতে নিয়োগ পাওয়া ‘৩৫ কর্মকর্তা’ বিপাকে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০১৭
বয়সসীমা পেরিয়ে ইসিতে নিয়োগ পাওয়া ‘৩৫ কর্মকর্তা’ বিপাকে

ঢাকা: সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পার হয়ে গেলেও ৩৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। যারা এখন অবসরে গিয়ে পেনশন নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন বা অবসরে যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে।

সূত্র জানিয়েছে, উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে ওই ৩৫ জনকে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। যারা পদোন্নতি পেয়ে পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হয়েছেন।

অনেকেই অবসরে গিয়ে পেনশনের বিষয়টি সামনে চলে আসায় বয়স গোপনের বিষয়টি ধরা পড়ে।
 
এরশাদ সরকারের সময় সৃষ্ট উপজেলা পরিষদে লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। যাদের মধ্যেই ছিলেন ওই ৩৫ জন। কিন্তু ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর উপজেলা পরিষদ বিলুপ্ত ঘোষণা করলে তাদের চাকরিও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এদিকে একই সময় ১৯৯০ সালের দিকে নির্বাচন কমিশনে উপজেলা পরিষদে লোকবল দরকার হয়। সে সময় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করতেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তাদের সহায়তার জন্য নির্বাচন কমিশনের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারির প্রয়োজন পড়ে। ফলে একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে উপজেলা পরিষদের কর্মচারিদের মধ্য থেকে ভূতাপেক্ষভাবে ১৯৯৫ সালে ৩৫ জনকে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে আত্মীকরণ করা হয়।
 
এই কর্মচারিরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন দফতরে মাস্টাররোলে, আবার অস্থায়ী হিসেবে প্রথম নিয়োগ পেয়েছিলেন। তাই বয়সের বিষয়টি তেমন দেখা হয়নি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের মাধ্যমে তারা প্রথম সম্পূর্ণ সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন। তবে সে সময় বয়সের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হয়নি।
 
ইসি কর্মকর্তা বলছেন, বয়সসীমা পার হয়ে যাওয়ার পরও কেউ সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এতে প্রকৃত প্রার্থী বঞ্চিত হয়েছে। তাদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। সে সময় যারা এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন, তারাই বিষয়টি গোপন করেছেন।
 
ইসির বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি উপ-সচিব হিসেবে অবসরে যাওয়া এক কর্মকর্তা সে সময় ওই ৩৫ জনের নিয়োগের বিষয়টি দেখেছেন। কাজেই তিনিসহ একটি চক্র পুরো কাজটি করেছেন।
 
৩৫ জনের মধ্যে অনেকেই পেনশনে গেছেন উল্লেখ করে কয়েকজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, সারাজীবন চাকরি করে এখন তাদের আইনি জটিলতায় পড়তে হবে। কেননা, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে ওইসব কর্মকর্তার বিষয়ে দু’দফায় চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে যে, তাদের বষয় গোপনের বিষয়টি প্রমার্জন করা হয়েছে কিনা? যদি প্রমার্জন না হয়, তবে তারা পেনশন পাবেন না। আবার সারাজীবনের যে বেতন উত্তোলন করেছেন, ক্ষেত্র বিশেষে তাও ফেরত দিতে হতে পারে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জানতে চাওয়ার পর নির্বাচন কমিশন বিষয়টি নিয়ে করণীয় পর্যালোচনা করছে।
 
ইসির জ্যেষ্ঠ কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই কর্মকর্তাদের বয়স এখনো প্রমার্জন করা হয়নি। এক্ষেত্রে বয়স প্রমার্জনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের থাকলেও এটি না হওয়া পর্যন্ত তারা পেনশন বা আনুতোষিক পাবেন না।
 
এ বিষয়ে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, আমার কোনো ধারণা নেই। ৩৫, ৪০ জন কর্মকর্তা নিয়োগের সময় বয়স গোপন করেছিলেন বলে আমার কোনো জ্ঞান নেই। আমি এসব জানি না।
 
জানা গেছে, ওই ৩৫ জনকে নিয়োগের সময় সরকারি চাকরির বয়সীমা ছিল ২৭ বছর। কিন্তু তারা যখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দফতরে নিয়োগ পেয়েছিলেন তখনই তাদের বয়স ২৭ বছরের বেশি ছিল।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০১৭
ইইউডি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।