সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বাংলানিউজকে এ খবর নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, কোম্পানিটি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করায় এবং যথাসময়ে স্মার্টকার্ড প্রস্তুত করে দিতে না পারায় তাদের কাছ থেকে ৩৫০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ আদায় করেছি।
২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ৯ কোটি নাগরিকের স্মার্টকার্ড সরবরাহে ফরাসি কোম্পানি অবার্থার টেকনোলজিসের সঙ্গে ৭৯৬ কোটি ২৬ লাখ টাকার চুক্তি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শর্ত অনুসারে ১৮ মাসের মধ্যে সবগুলো স্মার্টকার্ড তৈরি করে দেওয়ার কথা থাকলেও ৩০ মাসেও পারেনি কোম্পানিটি।
কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে চুক্তির মেয়াদ করা হয় ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত। সে সময় পর্যন্ত তারা ঢাকায় ফাঁকা কার্ড পাঠিয়েছে ছয় কোটি ৬৩ লাখ ৬ হাজার। এর মধ্যে পারসোনালাইজেশন (নাগরিকের তথ্য ইনপুট) হয়েছে এক কোটি ২৪ লাখ কার্ডে। ব্ল্যাংক কার্ড দিতে পারেনি দুই কোটি ৩৬ লাখ ৪ হাজার।
ইসি’র এনআইডি শাখার মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, চুক্তির পর থেকেই কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করেনি কোম্পানিটি। বরং বারবার নানা অজুহাতে সময় নিয়েছে। ফলে ঝুলে গেছে পুরো প্রক্রিয়াটি। তাই এবার ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
জানা গেছে, সব কার্ড বুঝিয়ে দিতে অবার্থারকে মোট ২৫ বার তাগাদা দিয়েও যখন সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন হার্ডলাইনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। অবশেষে কার্ড সরবরাহ করতে না পারার কিছু কারণ ব্যাখ্যা করে ওই ফরাসি প্রতিষ্ঠান। নির্ধারিত সময়ে কার্ড সরবরাহ করতে না পারায় চুক্তির মেয়াদ না বাড়িয়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করে নির্বাচন কমিশন। একইসঙ্গে আইনজীবী নিয়োগ করে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে সম্প্রতি অবার্থার ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩৫০ কোটি টাকা জরিমানা দিয়েছে।
২০১১ সালে ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর অ্যানহেন্সিং অ্যাকসেস টু সার্ভিস (আইডিইএ)’ প্রকল্পের মাধ্যমে নাগরিকদের স্মার্টকার্ড দিতে প্রকল্প হাতে নিয়েছিল এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এতে বিশ্বব্যাংক ১৭০ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেয়। যার মেয়াদ শেষ হবে আগামী ডিসেম্বরে। এ সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারলে বিশ্বব্যাংকও আর মেয়াদ বাড়াবে না বলে জানিয়েছে ইসিকে। এক্ষেত্রে প্রকল্পের ঋণ সহায়তার একটা বিরাট অংকের টাকা ফেরত যাবে।
বর্তমানে নিজেদের লোকবল দিয়েই স্মার্টকার্ড পারসোনালাইজেশন করছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়াও আগামীতে দেশের সব নাগরিককে স্মার্টকার্ড দিতে সরকারের তহবিল থেকে আরেকটি প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ফরাসি প্রতিষ্ঠান বাদ, স্মার্টকার্ড তৈরি করছে ইসি
দেশেই তৈরি হবে স্মার্টকার্ড
স্মার্টকার্ড উৎপাদন-বিতরণে সশস্ত্র বাহিনীকে চায় ইসি
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৭
ইইউডি/এমজেএফ