কয়েকদিন পরই নগরপিতা নির্বাচনে ভোট দেবেন রংপুরবাসী। তাই প্রার্থীরা ভোট চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মধ্যরাত অব্দি।
এলাকাটির নাম আশরতপুর। রসিক-এর ২৮ নম্বর ওয়ার্ড। এ এলাকার ভোটাররাও গভীর রাতেও চায়ে কাপে তুলছেন ভোটের ঝড়। কারো মুখে শোনা গেল উন্নয়নের ফিরিস্তি। কেউ আবার আওড়ালেন কে কতো ভালো লোক, কাছের লোক ইত্যাদি। আর এই আড্ডার মাঝেই বুঝি নির্ধারিত হচ্ছে ভাবী নগরপিতার নাম।
চায়ের দোকানি আব্দুল গণি বাংলানিউজকে বলেন, গিরাম এহন সিটি হইছে। আর অংপুরে (রংপুর) একটা ডেন (ড্রেন) ঠিক হচ্চে দুই বছর ধরি। এই হলো উন্নয়ন।
অনেকটা ক্ষোভের সুরই তার গলায় স্পষ্ট হয়ে ধরা দিল। বললেন-পাঁচ বছরে সিটি হওয়ার পর উন্নয়ন কিছু নেই। রাস্তা ঘাট সব এবড়ো-থেবড়ো। গ্রামগুলো গ্রামই থেকে গেছে। সিটির কোনো চিহ্নও নাই। এবার ভোটে এসব বিবেচনায় আসবে।
রিকশাচালক আতাউর রহমান বলেন, পাঁচ বছর দায়িত্বে ছিলেন সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু। এবার নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। কিন্তু তাকে কখনও কাছে পাওয়া যায় না। অভাব-অভিযোগ শুনতে তিনিও কখনও আসনে না। এসব বিষয় ভোটে প্রভাব পড়বে।
এ কে এম মাসুদ রানা নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, মূলত এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ঝন্টু ও লাঙ্গল প্রতীকে মোস্তাফিজুর রহমানের মধ্যে। তবে প্রতীকের চেয়ে বড় হয়েছে দাঁড়িয়েছে এবার ব্যক্তি ইমেজ।
রসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২১ ডিসেম্বর। এই দুই প্রার্থী ছাড়াও মেয়র পদে আরও পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী কাওছার জামান, মই প্রতীকে আব্দুল কুদ্দুস, হাতপাখা নিয়ে এটিএম গোলাম মোস্তফা, আম প্রতীকে সেলিম আখতার ও হাতি প্রতীকে হোসেন মকবুল শাহরিয়ার।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) দিনগত মধ্যরাতে বিভিন্ন স্থানে কাউন্সিলর প্রার্থীদেরও দল বেঁধে ঘুরতে দেখা গেছে। এ সিটিতে মোট ৩৩ টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ভোট হবে। এক্ষেত্রে সাধারণ ওয়ার্ডে ১৭৯ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৬৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ নির্বাচনে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪২১ জন ভোটার তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬৫৯ জন পুরুষ ভোটার এবং ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৬২ জন নারী ভোটার।
২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত রসিকের প্রথম নির্বাচনে সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টুর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। সে সময় কাওসার জামান বালা, আব্দুর রউফ মানিক, গোলাম মোস্তফা বাবু, আব্দুল কুদ্দুস ও মেহেদী হাসান বনিও মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
২০১২ সালে নির্দলীয়ভাবে এ সিটিতে ভোট হয়েছিল। তখন জাতীয় পার্টির নেতা মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে ২৮ হাজার ৪৫০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন ঝন্টু। তিনি ১ লাখ ৬ হাজার ২৫৫ ভোট পেয়েছিলেন। আর মোস্তফা পান ৭৭ হাজার ৮০৫ ভোট।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
ইইউডি/এমএ