প্রার্থীর যোগ্যতা:
নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে প্রার্থীকে মনোনয়ন দাখিলের দিন ২৫ বছর পূর্ণ হতে হবে। মেয়র পদের জন্য পুরো সিটির কোনো একটি এলাকার ভোটার হতে হবে।
প্রার্থীর অযোগ্যতা:
নির্বাচনে প্রার্থীর অযোগ্যতা হিসেবে বলা হয়েছে- বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করলে বা হারালে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হবেন। এছাড়া কোনো আদালত থেকে অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত হলে, প্রজাতন্ত্র বা সিটি কর্পোরেশন বা কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষের লাভজনক পদে সার্বক্ষণিক অধিষ্ঠিত থাকলেও প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য হবেন।
এছাড়া আরও বেশকিছু অযোগ্যতার বিষয় স্পষ্ট করেছে ইসি।
ক) সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশনে সরকারকে পণ্য সরবরাহ করার জন্য বা কোনো চুক্তি বাস্তবায়ন বা সেবা কার্যক্রমের জন্য বা হিন্দু যৌথ পরিবারের সদস্য হিসেবে কোনো অংশ বা স্বার্থ আছে এরূপ কোনো চুক্তিতে আবদ্ধ থাকলে (এ বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকলে বা ব্যাখ্যার প্রয়োজন হলে মূল আইন দেখে নিতে হবে)।
খ) প্রার্থীর পরিবারের কোনো সদস্য সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশনের কার্য সম্পাদনে বা মালামাল সরবরাহের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত থাকলে বা এর জন্য নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদারিত্ব থাকলে বা সিটি কর্পোরেশনের কোনো বিষয়ে কোনো প্রকার আর্থিক স্বার্থ থাকলে।
গ) বসবাসের নিমিত্ত গৃহ-নির্মাণের জন্য কোনো ব্যাংক হতে গৃহীত ঋণ ব্যতীত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে গৃহীত ঋণ বা তার কোনো কিস্তি পরিশোধে খেলাপি হলে।
ঘ) কোনো কোম্পানির পরিচালক বা ফার্মের অংশীদার যার কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে গৃহীত ঋণ বা কোনো কিস্তি মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার তারিখের পূর্ববর্তী এক বৎসরের মধ্যে পরিশোধে খেলাপি হলে।
ঙ) মনোনয়নপত্র জমাদানের দিনে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে গৃহীত কোনো ঋণ মেয়াদ উত্তীর্ণ অবস্থায় অনাদায়ী থাকলে।
চ) সিটি কর্পোরেশনের নিকট হতে গৃহীত কোনো ঋণ বা দায় দেনা অপরিশোধিত থাকলে।
ছ) সিটি কর্পোরেশন বা সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত নিরীক্ষকের প্রতিবেদন অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশনকে নির্ধারিত দায়কৃত অর্থ অপরিশোধিত থাকলে।
জ) জাতীয় সংসদ বা কোনো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সদস্য হলে।
ঞ) সিটি কর্পোরেশনে তহবিল তসরুফের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত, জাতীয় বা আন্তর্জাতিক আদালত/ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক যুদ্ধাপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত হলে এবং কোন আদালত কর্তৃক ফেরারি আসামি ঘোষিত হলে।
এছাড়াও সরকারি কর্মচারীর প্রতি ক্ষতি সাধনের হুমকি প্রদান (দণ্ডবিধি ধারা ১৮৯), মিথ্যা সাক্ষ্য সৃষ্টি করা (দণ্ডবিধি ধারা ১৯২), কোনো ব্যক্তিকে শাস্তি হতে বাঁচানোর জন্য উপহার গ্রহণ করা (দণ্ডবিধি ধারা ২১৩), সরকারি কর্মচারীকে তার কর্তব্য কর্মে বাধা প্রদান করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাপূর্বক আঘাত করা (দণ্ডবিধি ধারা ৩৩২), সরকারি কর্মচারীকে তার কর্তব্য কর্মে বাধা প্রদান করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাপূর্বক গুরুতর আঘাত করা (দণ্ডবিধি ধারা ৩৩৩), সরকারি কর্মচারীকে তার কর্তব্য সম্পাদন বাধা প্রদান করার উদ্দেশ্যে আক্রমণ কিংবা অপরাধ জনক বল প্রয়োগ (দণ্ডবিধি ধারা ৩৫৩) করা, এই অপরাধগুলোর যে কোনো একটির কারণে আদালত থেকে বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত হলেও কোনো ব্যক্তি সিটি নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারবেন না।
এদিকে আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হয়ে দায় থেকে অব্যাহতি পেলে, কোনো ফৌজদারি বা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যুন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে এবং কেবল মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত হলে কোনো ব্যক্তি প্রার্থী হতে পারবেন।
বিদেশি অনুদান বা তহবিল গ্রহণকারী বেসরকারি সংস্থার প্রধান কার্যনির্বাহী পদ থেকে পদত্যাগ বা অবসর গ্রহণ বা পদচ্যুত হলে এবং এরপর তিন বৎসর অতিবাহিত হলেও প্রার্থী হওয়া যাবে। আবার সরকারি বা আধাসরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা কোনো সমবায় সমিতি, ইত্যাদি হতে নৈতিক স্খলন, দুর্নীতি, অসদাচরণ ইত্যাদি অপরাধের জন্য শাস্তিমূলকভাবে চাকুরিচ্যুত হলে এবং এরপর পাঁচ বছর কাল অতিক্রান্ত হলেও প্রার্থী হওয়া যাবে।
মনোনয়ন ফরম সংক্রান্ত কিছু তথ্যাবলী:
সিটি কর্পোরেশনের অন্য কোন পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করলে মনোনয়ন ফরম বাতিল হবে। মনোনয়নপত্রের সাথে সংযুক্ত ঘোষণায় অবশ্যই প্রার্থীর স্বাক্ষর থাকতে হবে, মনোনয়নপত্রের সাথে হলফনামায় (সংযুক্ত নমুনা অনুযায়ী) স্বাক্ষর করতে হবে। এটি এফিডেভিটরুপে যথাযথভাবে পূরণ করে নোটারি পাবলিক অথবা ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর নিয়ে দাখিল করা আবশ্যক। মনোনয়নপত্র ও হলফনামার সাথে প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের সম্ভাব্য উৎসের ও সম্ভাব্য ব্যয়ের বিবরণী সম্বলিত নির্ধারিত ফরম-ঢ দাখিল করতে হবে।
যে সকল কাগজপত্র বা দলিলালি সংযুক্ত করতে হবে:
যথাযথভাবে পূরণকৃত মনোনয়ন ফরম (ফরম নম্বর-ক/ক-১/ক-২), অর্জিত সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি, বর্তমানে কোন ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্ত আছেন কিনা তার বিবরণ,অতীতে আপনার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত কোন ফৌজদারী মামলার রেকর্ড আছে কিনা, থাকলে এর রায় কি ছিল তার বিবরণ, ব্যবসা বা পেশার বিবরণী (এটি সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে)। এক্ষেত্রে আয়ের উৎস বা উৎসমূহের বিবরণ, প্রার্থীর নিজের ও অন্যান্য নির্ভরশীলদের সম্পদ ও দায়ের বিবরণী, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে একক বা যৌথভাবে বা প্রার্থীর উপর নির্ভরশীল সদস্য কর্তৃক গৃহীত ঋণের পরিমাণ অথবা কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা পরিচালক হওয়ার সুবাদে ঐ সব প্রতিষ্ঠান হতে গৃহীত ঋণের পরিমাণ, জামানত বাবদ নির্ধারিত অর্থ জমাদানের চালান/ব্যাংক ড্রাফটের কপি, নির্বাচনি ব্যয় নির্বাহ করার জন্য অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাব্য উৎস ও সম্ভাব্য ব্যয়ের বিবরণীও দিতে হবে। আবার নিজের ও নির্ভরশীলদের সম্পদের বিবরণী, ঋণ সংক্রান্ত তথ্যাদি, আয়কর রিটার্নের কপি ও আইটি- ১০ই (সম্পদের বিবরণী), আয়কর পরিশোধের প্রমাণপত্র (আয়কর বিভাগ প্রদত্ত রসিদ) ও ১২ ডিজিটের টিআইএন সনদের কপিও বাধ্যতামূলকভাবেই জমা দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৮
ইইউডি/এমজেএফ