সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে প্রায় ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রে। পুরো কাজে নিয়োজিত থাকবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং পোলিং কর্মকর্তা।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, সরকারের উপ-সচিব পদ মর্যদার কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের বিধান রয়েছে। আর অন্যদের প্রথম শ্রেণী, দ্বিতীয় শ্রেণী কর্মকর্তা ও তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারিদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন মনে করলে শুধু সরকারিই নয়, বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিককেই নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করতে পারে। সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের লোকবলও নিয়োগ করবে নির্বাচন কমিশন।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা থেকে জানা গেছে, ইতোমধ্যে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন বিভাগ, প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নামের তালিকা চাওয়া হয়েছে। এবারই প্রথমবারের মতো সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে সব কর্মকর্তার নামের তালিকা চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তালিকা পাওয়ার পর সেখান থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল তৈরি করা হবে।
নির্বাচন কমিশন সব নির্বাচনেই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার একাধিক তালিকা প্রণয়ন করে থাকে। এবারও তাই করা হচ্ছে। কেননা, নির্বাচনের আগ মুহূর্তে অনেককেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অন্যদের নিয়োগ করার প্রয়োজন পড়ে।
ইসির যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নামের তালিকা পাঠাতে শুরু করেছে। প্যানেল তৈরির কাজ সম্পন্ন করতে খুব বেশি সময় লাগবে না। তবে চূড়ান্ত তালিকা নির্ধারণ হবে ভোটের আগে। এরমধ্যেই ওই সব কর্মকর্তাদের সম্পর্কে গোয়েন্দা প্রতিবেদন নেওয়া হবে।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার তালিকা প্রণয়নে চারটি বিষয়কে এবার প্রাধান্য দেওয়ার বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দলীয় সম্পৃক্ততা, মৌলবাদের সম্পৃক্ততা, যোগসাজশের সম্পৃক্ততা কিংবা নৈতিক স্খলনে অভিযোগ থাকলে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে না।
ইসি কর্মকর্তারা বলেন, কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়ার বিষয়ে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। আর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাদের নিয়োগের আগে বেশ ভাল করেই খোঁজ খবর নেওয়া হবে। কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন ছাড়াও প্রমাণসহ কোনো লিখিত অভিযোগ এলে তাও আমলে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি।
এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক যুগ্ম সচিব বাংলানিউজকে বলেন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা প্যানেল তৈরির কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কোনোভাবেই বিতর্কিত কোনো কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হবে না।
এদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে ইতোমধ্যে বিভিন্ন ধরণের ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য ব্যবস্থা নিতে বলেছে মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদফতরকে। এক্ষেত্রে আলোচনার প্রাথমিক পর্যায়েই অধিদফতরের পক্ষ থেকে ইসিকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে বলা হয়েছে। সংসদ নির্বাচনের জন্য ১ লাখ ২০ হাজার রিম কাগজের প্রয়োজন হবে বলে মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদফতর জানিয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৮
ইইউডি/এসআরএস