সূত্র জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসীরা বিদেশে বসেই এনআইডি পাওয়া এবং ভোটার হওয়ার এবং ভোট প্রদানের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু প্রক্রিয়াগত কৌশল কী হবে, তা নির্ধারণে জটিলতা থাকায় এ নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি এতোদিন।
২০১৭ সালের শেষে দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৯ নিরুপম দেবনাথ দূতাবাসের মাধ্যমে এনআইডি সরবরাহের নির্দেশনা সম্বলিত একটি চিঠি ইসি সচিবের কাছে পাঠান।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পাওয়ার পর এরই মধ্যে প্রবাসে ভোটার করা ও এনআইডি সরবরাহ করা নিয়ে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন। সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে এবার উচ্চ পর্যায়ের একটি সেমিনার করছে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে অনুষ্ঠেয় এ সেমিনারে প্রবাসীদের প্রতিনিধি, সৌদি আরব, ইতালি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত, সরকারের প্রতিনিধি ও দলগুলোর প্রতিনিধি উপস্থিতি থাকবেন।
সেমিনার থেকে আসা পরামর্শের ভিত্তিতে পরবর্তী কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে বলে ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, দূতাবাসের মাধ্যমে ভোটার করতে এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করতে বা ভোটদানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হলে প্রথমেই আইনে সংশোধন আনতে হবে।
এরপর প্রক্রিয়াগত কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। কেনো না, প্রবাসে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার করার সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে দূতাবাসে এসেই আগ্রহীদের ভোটার হতে হবে। এজন্য দরকার পর্যাপ্ত লোকবল। ভোটার করার জন্য কিছু মেশিন পরিচালনার বিষয়ও রয়েছে। তাই দূতাবাসে ইসির লোকবল, না দূতাবাসের লোকবল কাজ করবেন, এসব বিষয়ও ঠিক করতে হবে।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ১ কোটির বেশি নাগরিক প্রবাস যাপন করছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী রয়েছে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। এরপর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালিতেও অনেক প্রবাসী বসবাস করেন। যাদের অনেকেই বিভিন্ন কারণে এনআইডি সংগ্রহ করতে দেশে আসেন। এতে অর্থব্যয়ের সঙ্গে প্রচুর সময়ও ব্যয় করতে হয়। আবার অনেক সময় নানা ভোগান্তিতে পড়ে সময়-অর্থ দুটোই ব্যয় হয়। অন্যদিকে তারা ভোটদান থেকেও বঞ্চিত হন।
মূলত: এ বিষয়কে সামনে রেখেই একটি কার্যকর পন্থা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে নির্বাচন কমিশন।
জানা গেছে, প্রবাসীদের ভোটার করা, স্মার্টকার্ড প্রদান ও ভোটদানের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সৌদি আবরকেই প্রথম বেছে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে ইসি। কেননা, এ দেশটিতে বিরাট সংখ্যক মানুষ বসবাস করেন। এরপর মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশকে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সংখ্যার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনাটি আসার পর আমরা বৈঠক করেছি। দূতাবাসের মাধ্যমে কোন প্রক্রিয়ায় ভোটার করা এবং এনআইডি সরবরাহ করা যায় তা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) আমরা একটি সেমিনারও করছি। সবার পরামর্শ ও মতামত নিয়েই একটি কার্যকর পন্থা খুঁজে পেতে চাচ্ছি। এক্ষেত্রে সবার আগে সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ, যেখানে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশের নাগরিক রয়েছে, সেখানে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল১৯, ২০১৮
ইইউডি/জেআইএম